গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ফিলিস্তিনিদের হামলায় দুই হাজার পাঁচ ইসরায়েলি সেনা আহত হয়েছে। ইসরায়েলের সেনাবাহিনী এ তথ্য দিয়েছে।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ বলছে, ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ফিলিস্তিনিদের হামলায় ৪০০ ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছে।
এদিকে ইসরায়েলের যুদ্ধবাজ প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আবারও সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের সঙ্গে চলমান সাময়িক যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পর আবারও গাজার ওপর পূর্ণ শক্তিতে হামলা চালাবে তেল আবিব। তিনি গতকাল (বুধবার) এক ভিডিও বার্তা প্রকাশ করে এই হুঁশিয়ারি দেন।
তিনি বলেন, অক্টোবরের গোড়ার দিকে তার সরকার গাজা যুদ্ধের যেসব লক্ষ্য স্থির করেছিল তার কোনোটিই এখনও অর্জন করা সম্ভব হয়নি।
হামাসের কাছ থেকে যুদ্ধবিরতির বিনিময়ে কিছু পণবন্দীকে উদ্ধারের ঘটনাকে তিনি ‘বিশাল অর্জন’ বলে দাবি করেন। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত সপ্তাহে যুদ্ধবিরতি ঘোষিত হওয়ার আগ পর্যন্ত পণবন্দীদের মুক্তি ‘কল্পনাতীত বিষয় বলে মনে হতো।”
নেতানিয়াহু এমন সময় ইসরায়েলি বন্দীদের মুক্তির ব্যাপারে কৃতিত্ব দাবি করলেন যখন হামাস শুরু থেকেই নারী ও শিশু বন্দীদের মুক্তি দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছিল কিন্তু ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীই তা নাকচ করে আসছিলেন। নেতানিয়াহুর ধারনা ছিল, যুদ্ধ করে পণবন্দীদের মুক্ত করে নিতে পারবেন তিনি। কিন্তু টানা ৪৭ দিন গাজা উপত্যকার ওপর পাশবিক হামলা চালিয়েও যখন পণবন্দীদের কোনো খোঁজ বের করতে পারেননি তখনই কেবল তিনি হামাসের সঙ্গে চুক্তি করতে বাধ্য হন।
বুধবারের ভিডিও বার্তায় নেতানিয়াহু আরও বলেন, “আমদেরকে শেষ পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হবে। এটি হচ্ছে আমার নীতি।” গত শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া দুই দফায় ছয় দিনের যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার আগ মুহূর্তে নেতানিয়াহুর এ ভিডিও বার্তা প্রকাশিত হয়।
গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগঠন হামাস ইসরায়েলের অভ্যন্তরে অনুপ্রবেশ করে নজিরবিহীন সামরিক অভিযান চালায়। ওই অভিযানে ১,২০০ ইসরায়েলি নিহত হয়। ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা দুই শতাধিক ইসরায়েলিকে বন্দী করে নিয়ে গাজা উপত্যকায় ফিরে যায়। সেদিন থেকেই ইসরায়েলের সেনাবাহিনী গাজায় ভয়াবহ রক্তাক্ত অভিযান শুরু করে। তবে এখন গাজায় যুদ্ধবিরতি চলছে।
ইসরায়েলে সামরিক অভিযানের বিষয়ে আল-জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হামাসের মুখপাত্র খালেদ কাদোমি বলেন, ‘দশকের পর দশক ধরে ফিলিস্তিনিদের ওপর চালানো নৃশংসতার জবাবে এই সামরিক অভিযান চালানো হয়েছে। আমরা চাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর এবং আমাদের পবিত্র স্থাপনা আল-আকসায় ইসরায়েলি নৃশংসতা বন্ধে উদ্যোগ নেবে। এগুলোই হামাসের এই অভিযানের কারণ।’