রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলমান যুদ্ধে ইউক্রেনীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছে রাশিয়া। মঙ্গলবার রুশ সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইগর কিরিলভ এই অভিযোগ এনেছেন।
রুশ প্রতিরক্ষা বাহিনীর পরমাণু, রাসায়নিক ও জৈব অস্ত্র সুরক্ষা বিভাগের প্রধানের দায়িত্বে রয়েছেন ইগর কিরিলভ। কৃষ্ণ সাগরের তীরবর্তী রুশ রিসোর্ট শহর সোচিতে বর্তমানে রাশিয়ার তরুণ বিজ্ঞানীদের সম্মেলন চলছে। মঙ্গলবার সেই সম্মেলনে বক্তব্য দেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল কিরিলভ।
নিজ বক্তব্যে কিরিলভ বলেন, ‘ইউক্রেনের যেসব অঞ্চল রাশিয়ান ফেডারেশনের অন্তর্ভূক্ত হয়েছে, সেখানকার কয়েকজন প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছে এবং আমরা মস্কোর কেন্দ্রীয় প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়েছি।’
‘এবং শুধু রুশ কর্মকর্তাদেরকে বিষপ্রয়োগই নয়, রুশ সেনাদের ওপর রাসায়নিক অস্ত্রও প্রয়োগ করেছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। আমাদের কাছে থাকা তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে রুশ বাহিনীকে লক্ষ্য করে ১৭ বার রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে।’
২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত মিনস্ক চুক্তিতে কৃষ্ণ সাগরের উপদ্বীপ ক্রিমিয়াকে রুশ ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও পরে তা পূরণ না করা এবং যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য তদবিরের অভিযোগে ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু করে রুশ সেনারা। সেই অভিযান এখনও চলছে।
যুদ্ধের শুরু থেকেই ইউক্রেনকে আর্থিক ও সামরিক সহায়তা দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র, তার ইউরোপীয় মিত্ররা এবং ন্যাটো। যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া সহায়তার পরিমাণ অবশ্য সবচেয়ে বেশি। এ পর্যন্ত হাজার কোটি ডলারের বেশি আর্থিক ও সমরাস্ত্র সহায়তা ইউক্রেনকে দিয়েছে দেশটি।
মঙ্গলবারের বক্তব্যে লেফটেন্যান্ট জেনারেল কিরিলভ অভিযোগ করেন, নিয়মিত সমরাস্ত্রের পাশাপাশি ইউক্রেনকে রাসায়নিক অস্ত্রও সরবরাহ করেছে যুক্তরাষ্ট্র এবং ন্যাটো।
‘আমাদের কাছে অকাট্য প্রমাণ রয়েছে যে যুক্তরাষ্ট্র ও তার নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ইউক্রেনকে রাসায়নিক অস্ত্র এবং এসব অস্ত্র তৈরির প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম পাঠিয়েছে,’ সম্মেলনে বলেন কিরিলভ।
প্রসঙ্গত, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর রীতিমতো আইন করে যুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে জাতিসংঘ।