স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত হচ্ছে দোকানপাট-শপিংমলে। বেশিরভাগ মার্কেটে স্বাস্থ্যবিধির নির্দেশনাগুলো মানার ক্ষেত্রে অধিকাংশ মানুষ ছিলেন উদাসীন। শুক্রবার সকাল থেকেই মার্কেটগুলোতে গত কয়েকদিনের তুলনায় বেশি মানুষের আনাগোনা দেখা যায়। চলমান বিধিনিষেধের মধ্যে দোকানপাট-শপিংমল খোলা থাকছে রাত ৮টা পর্যন্ত। গত সোমবার দোকানপাট খুলে দেয়ার পর মার্কেটগুলোতে ক্রেতাদের সংখ্যা বেড়েছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, গণপরিবহন কম থাকায় ক্রেতারা মার্কেটে আসতে পারছেন না। এছাড়াও ঈদে মানুষ গ্রামে ফিরতে পারবে কি-না তা নিয়েও রয়েছে অনিশ্চয়তা। ফলে কেনাকাটা করছে না বেশিরভাগ মানুষ। শুক্রবার রাজধানীর তালতলা, মৌচাক, বেইলি রোড, নিউমার্কেট, গাউছিয়া, চন্দ্রিমা সুপার মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, সব মার্কেটেই কম-বেশি ক্রেতাদের ভিড় রয়েছে। আর এ ভিড়ে যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানছে না অনেকেই। এখনও বেশিরভাগ মার্কেটে নেই জীবাণুনাশক টানেল, হাত ধোয়ার ব্যবস্থা, হ্যান্ড স্যানিটাইজার কিংবা মাস্ক পরিধানে তদারকির করার কোনো ব্যবস্থা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নিউমার্কেটের ভেতরে নিচতলায় ক্রেতাদের চাপ বেশি। ফলে একজন থেকে আরেকজনের নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব হচ্ছে না। দোকানগুলোতেও কোনো ধরনের ব্যারিকেড কিংবা পদচিহ্ন দিয়ে দূরত্ব নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করা হয়নি।
নিউমার্কেটে প্রবেশের ফটক মোট চারটি। চারটি ফটকেই জীবাণুনাশক স্প্রে করার অবকাঠামো আছে কিন্তু একটিও সচল নয়। একই অবস্থা তালতলা মার্কেটেও। আর মৌচাক মার্কেটের চারটি গেটের মধ্যে সামনের প্রধান গেটে শুধু জীবাণুনাশক টানেল লাগানো রয়েছে। তবে এর থেকে ভালো অবস্থা বেইলি রোডের শপিংমলগুলোর। সেখানে ট্যানেলের পাশাপাশি ক্রেতারা ফটক দিয়ে প্রবেশ করলে তাপমাত্রা মাপার বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার স্প্রে করার ব্যবস্থা দেখা গেছে।
একই ধরনের বক্তব্য প্রায় বিভিন্ন মার্কেটের মালিক সমিতির। তবে সব মার্কেটেই ঘুরে দেখা গেছে, দুই-তৃতীয়াংশের বেশি দোকানেই কোনো হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা নেই। মার্কেটে অধিকাংশ ক্রেতার মুখে মাস্ক থাকলেও বিক্রেতাদের অনেকের মাস্ক থুতনিতে নামানো ছিল। ক্রেতাদের চেয়ে বিক্রেতাদের মাস্ক ব্যবহারের প্রবণতা কম দেখা গেছে।
মাস্ক নেই কেন এমন প্রশ্ন করলে অধিকাংশ দোকানিই মাস্ক আনতে ভুলে যাওয়ার কথা বলেন। কেউবা পাশেই রাখা মাস্ক দেখিয়ে বলছেন, সারাদিন পরে ছিলাম। মাত্র খুলে রেখেছি ক্রেতা নেই বলে। এদিকে মুখের মাস্ক নামিয়েই শাড়ি কেনার জন্য দর-দাম করছিলেন সুমি ইসলাম। জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, মাস্ক এভাবে রাখলে ঝুঁকি আছে জানি। কিন্তু মার্কেটের ভেতরে খুব গরম। সব সময় মুখে মাস্ক রাখা যায় না। মাঝে মাঝে একটু নামিয়ে বাতাস নিচ্ছি।
ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে গত রোববার থেকে সারাদেশে দোকানপাট ও শপিংমলগুলো চালু করে দেয়া হয়। সেদিন রাতেই ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, রাজধানীতে শপিংমল–দোকানপাট রাত নয়টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে। পরে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে দোকানপাট। তবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকানপাট চালাতে হবে। যদিও বাস্তবতা তার উল্টো।