ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাবদ এক কোটি ৫৯ লাখ টাকা কলেজ অধ্যক্ষ ও সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালকের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়েছে। এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালককে লিখিত জবাব দিতে বলা হলেও তিনি তা দেননি বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও প্রকল্প পরিচালকের দাবি, তিনি আইনজীবীর মাধ্যমে জবাব দিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কলেজের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য প্রকল্প কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে বিভিন্ন কিস্তিতে এক কোটি ৫৯ লাখ টাকা নিয়েছেন কলেজের প্রকল্প পরিচালনার আহ্বায়ক ও অভিভাবক প্রতিনিধি (মাধ্যমিক) সিদ্দিকী নাসির উদ্দিন। কিন্তু তিনি ওই টাকার নির্দিষ্ট খাতওয়ারি কোনো খরচ দেখাননি এবং কোনো বিল বা ভাউচারও দেননি। ভবিষ্যতে অডিট আপত্তির ঝামেলা এড়াতে এর হিসাব দেয়ার জন্য চিঠি ইস্যু করেছেন অধ্যক্ষ কামরুন নাহার।
জানতে চাইলে কলেজের প্রকল্প পরিচালনার আহ্বায়ক সিদ্দিকী নাসির উদ্দিন বলেন, ‘কলেজের প্রিন্সিপাল বিষয়টি না জেনে আমাকে চিঠি ইস্যু করেছেন। তিনি অনেক দিন ধরে প্রতিষ্ঠানে আসেন না। গত চার মাসে চার দিনও কলেজে আসেননি। ওনার বাসায়ও কোনো অভিভাবক বা গভর্নিং বোর্ডের সদস্যরা যেতে পারেন না।’ তিনি আরও বলেন, ‘কলেজ থেকে যে টাকার অঙ্কের কথা বলা হচ্ছে সেটি ভুল। আর এ টাকা মঞ্জুর হওয়ার জন্য আমাদের একটি নির্দিষ্ট কমিটি আছে। জবাবদিহিতাও কমিটিতে করা আছে। প্রিন্সিপাল কিছু না জেনেই চিঠি ইস্যু করেছেন। এটি ইস্যুর কোনো এখতিয়ার তিনি রাখেন না।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ কামরুন নাহার বলেন, ‘বিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত কাজ ও ভবন নির্মাণের জন্য এ পর্যন্ত প্রায় দুই কোটি টাকা দেয়া হলেও তার বিল ভাউচার জমা দেননি তিনি। বিষয়টি গভর্নিং বডির সভায় তুললে সিদ্দিকী নাসির উদ্দিনকে লিখিতভাবে জানানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তার ভিত্তিতে তাকে চিঠি দেয়া হয়েছে। চিঠি দেয়ার পর এখনো তিনি আদায় করা অর্থের হিসাব না দিয়ে উল্টো আমাকে নানাভাবে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করছেন।’
অধ্যক্ষ আরও বলেন, ‘আমার যোগদানের পর ভবনের বিভিন্ন কাজের জন্য অর্থ চাইলে আমি অফিসিয়ালি বিল ভাউচার দিতে বলি। ভাউচার না দেয়ায় আমি অর্থছাড়ে অনুমোদন দেইনি বলে আমার অফিস রুম তালা দিয়ে শিক্ষকদের সামনে গালাগাল করেন। দুই ঘণ্টা পরে সেই তালা খুলে দেয়া হয়। বিষয়টি গভর্নিং বডির সভাপতিকে জানানো হয়েছে। দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ প্রসঙ্গে সিদ্দিকী নাসির উদ্দিন বলেন, ‘উনি আমার নামে মিথ্যাচার করছেন। এটা একটা অফিসিয়াল চিঠি। তিনি আমাকে ডাকযোগে পাঠিয়েছেন। আমি উকিলের মাধ্যমে এটার জবাব দিয়েছি। কিন্তু এই চিঠি ফেসবুক বা মেসেঞ্জারে কিভাবে পাবলিশড হলো সেটি আমার প্রশ্ন। আমাকে অপমান অপদস্থ করা তার মূল উদ্দেশ্য। সত্যি বলতে তিনি এত বড় প্রতিষ্ঠান চালানোর যোগ্যতাই রাখেন না। এবং আমার নামে ডাহা মিথ্যাচার করছেন।’