দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে নাজেহাল দেশের মানুষ। আমিষের চাহিদা পূরণ করতে হিমশিম খাচ্ছে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তরা। তবে এর মধ্যে ভিন্ন এক চিত্রের দেখা মিলছে গরুর মাংসের দোকানগুলোতে। নিম্ন-মধ্যবিত্তদের বছরেও না খাওয়া গরুর মাংসের দোকানে লেগেছে লম্বা লাইন! কারণ ২০০ টাকা কমে ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস।
তেমনই একটি রাজধানীর আবুল হোটেলের পার্শ্ববর্তী খোরশেদ গোস্ত বিপণি। শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) সরজমিনে দোকানটি ও আশপাশের বাজার ঘুরে এসব চিত্র গেছে।
ক্রেতারা বলছেন, সাধারণত ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা কেজিতে গরুর মাংস বিক্রয় হয়। ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকা এই মাংস এখন ৬০০ টাকা করে বিক্রয় হওয়ায় তারা কিনতে এনেছেন।
মালিনাগ হাজীপাড়ার বাসিন্দা আমিরুল ইসলাম তাদের মধ্যে অন্যতম। ঢাকা মেইলকে তিনি বলেন, এমনিতে গরুর মাংসের যে দাম, তিনমাসেও কেনা সম্ভব হয় না। গতকাল ফেসবুকে দেখলাম ২০০ টাকা কমে ৬০০ টাকায় গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে। সকালে আমার স্ত্রী বললো আবুল হোটেলের পাশের দোকানে নাকি ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশের বাসার একজন কিনে এনেছে। সেটা শুনে এসেছি। এসে দেখি লম্বা লাইন। প্রায় ৩০-৪৫ মিনিট লাইনে দাঁড়িয়ে দুই কেজি কিনেছি।
খোরশেদ গোস্ত বিপণির এক কসাই বলেন, গত চার দিন ধরে এই দামে মাংস বিক্রি করছি। মানুষ লাইন দিয়ে মাংস কিনছে।
হঠাৎ দাম কমার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, মহাজনের ইচ্ছা। তিনি ৬০০ টাকা কেজি ধরে বিক্রি করছেন। কেন বা কতদিন এই অফার চলবে তা জানি না। সবই মহাজনের ইচ্ছার উপর নির্ভর করছে।
এ সময় দোকানটির পাশে আরও তিনটি গরু দাঁড় করিয়ে রাখতে দেখা যায়। যতক্ষণ চাহিদা থাকবে ততক্ষণ জবাই ও বিক্রি চলবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।
পাশের চায়ের দোকানী আতা মিয়া বলেন, গত চার থেকে পাঁচ দিন ধরে এই দামে বিক্রি চলছে। লাভ না হলে তো আর এই দামে বেচে না। বাজারের ভেতরের দোকানেও এই দামে বিক্রি করছে।
এদিকে আশপাশের বাজারের ভেতর ও মগবাজার চারুলতা মার্কেটেও একই দামে বিক্রয় হচ্ছে বলে জানা গেছে। মানুষজন লাইন দিয়ে এসব দোকান থেকে মাংস কিনছেন। এ নিয়ে সকলের মাঝেই কৌতুহল তৈরি হয়েছে। অনেকে ৬০০ টাকা কেজি দরে মাংস বিক্রি নিয়ে নানা চুটকিও করছেন। মালিবাগ রেলগেটে একজন ক্রেতাকে মাংসের ব্যাগসহ যেতে দেখে রাস্তায় পাশে দাঁড়িয়ে থাকা এক ব্যক্তিকে ‘নৌকায় ভোট দিতে শেখ হাসিনা ফ্রিতে গরুর মাংস বিলাচ্ছে’ বলে মন্তব্য করতেও শোনা যায়।