চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে স্বৈরশাসক বা একনায়ক হিসেবে আবারও আখ্যায়িত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। স্থানীয় সময় বুধবার (১৫ নভেম্বর) ফ্রান্সিসকোর বে এরেনায় আয়োজিত বৈঠক শেষ হওয়ার পরপরই বাইডেন একথা জানান।
অবশ্য শি জিনপিংকে গত জুন মাসেও একবার স্বৈরশাসক আখ্যা দিয়েছিলেন বাইডেন। চীনা প্রেসিডেন্টকে নিয়ে মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক এই প্রেসিডেন্ট তার দৃষ্টিভঙ্গি যে পরিবর্তন করেননি তা এই সদ্যসমাপ্ত বৈঠকের পরই স্পষ্ট হলো।
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেশ কয়েক মাস ধরে নেওয়া পরিকল্পনা ও প্রস্তুতির পর বুধবার সান ফ্রান্সিসকোর বে এরেনায় বৈঠক করেন শি জিনপিং ও জো বাইডেন। এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনোমিক কোঅপারেশন (এপিইসি) সম্মেলনের ফাঁকে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকের পরই জো বাইডেন জানান, তিনি চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে এখনও একজন ‘স্বৈরশাসক’ হিসেবেই বিবেচনা করেন।
রয়টার্স বলছে, সান ফ্রান্সিসকোতে শি জিনপিংয়ের সঙ্গে চার ঘণ্টা আলোচনার পর প্রেসিডেন্ট বাইডেন একক সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনের শেষের দিকে তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়, শি জিনপিং একজন স্বৈরশাসক বলে গত জুনে আপনি জানিয়েছিলেন। সেই একই বিষয়টি আপনি এখনও মনে করেন কিনা।
জবাবে বাইডেন বলেন, ‘দেখুন, তিনি একজন স্বৈরশাসক। তিনি এই অর্থে একজন স্বৈরশাসক যে, তিনি এমন একটি রাষ্ট্র পরিচালনা করেন যেটি কমিউনিস্ট দেশ এবং যা আমাদের চেয়ে সম্পূর্ণ আলাদা ধরনের সরকারের ওপর ভিত্তি করে পরিচালিত হয়।’
যদিও বাইডেনের এই মন্তব্যের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র সফররত চীনা প্রতিনিধি দলের কাছ থেকে তাৎক্ষণিক কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
অবশ্য জো বাইডেনের এই মন্তব্য চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ককে আরও জটিল করে তুলতে পারে বলে ধারণা করছেন অনেকে। যদিও সাম্প্রতিক মাসগুলোতে উত্তেজনা কমানোর লক্ষ্যে উভয় দেশ নিজেদের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ে একের পর এক বৈঠক করে গেছে এবং এই অংশ হিসেবে দ্বিতীয়বারের মতো সামনা-সামনি বৈঠক করলেন উভয় নেতা।
এর আগে চলতি বছরের জুনেও শি জিনপিংকে স্বৈরশাসক আখ্যা দিয়েছিলেন বাইডেন। মার্কিন প্রেসিডেন্টের সেই মন্তব্যের পর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিল চীন। এমনকি চীন সেই মন্তব্যকে অযৌক্তিক এবং উস্কানিমূলক বলেও অভিহিত করেছিল।
উল্লেখ্য, গত মার্চে চীনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজের তৃতীয় মেয়াদ নিশ্চিত করেন শি জিনপিং। সেসময় চীনের ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসের প্রায় ৩ হাজার সদস্য তাকে সর্বসম্মতভাবে ভোট দিয়েছিলেন। যদিও সেই নির্বাচনে জিনপিংয়ের বিপরীতে অন্য কোনও প্রার্থী ছিল না।
এছাড়া মাও সেতুংয়ের পর শি জিনপিংকে চীনের সবচেয়ে শক্তিশালী নেতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে।