বাংলাদেশের রাজনীতি ও পার্লামেন্ট নির্বাচন একান্তভাবেই সেই দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার; আর কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে বাইরের হস্তক্ষেপ ভারতের পররাষ্ট্রনীতিতে সমর্থন করা হয় না বলে ওয়াশিংটনকে জানিয়েছে নয়াদিল্লি।
শুক্রবার ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের ‘টু প্লাস টু’ বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিনোদ মোহন কোয়াত্রা। সচিব বলেন, ‘বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনীতি ও আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। আমাদের তরফে আমরা খুবই পরিষ্কারভাবে এই ইস্যুতে আমাদের অবস্থান তুলে ধরেছি।’
‘ভারত বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ মিত্র এবং অংশীদার। বাংলাদেশকে স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ করতে ভারত সবসময়েই সহযোগিতা করছে এবং ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে। তবে অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ বা প্রভাব বিস্তার ভারতের পররাষ্ট্রনীতিতে সমর্থন করা হয় না।’
‘বৈঠকে আমরা স্পষ্টভাবেই বলেছি, বাংলাদেশের রাজনীতি ও নির্বাচন একান্তভাবেই দেশটির অভ্যন্তরীণ ব্যাপার এবং এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন বাংলাদেশের জনগণ। তারাই তাদের নিজেদের এবং দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবেন।’
শুক্রবার ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করতে নয়াদিল্লি এসেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন। সেই বৈঠকের নামই ‘টু প্লাস টু’।
দুই দেশের এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রের বরাতে জানা গেছে, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের পারস্পরিক কূটনৈতিক ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, ভারত-মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপ ইকোনমিক করিডোর, কোয়াড জোট, ইন্দো-প্রশান্ত অঞ্চলের পরিস্থিতি, গ্লোবাল সাউথ অঞ্চলে ভারতের নেতৃত্ব এই বৈঠকের মূল আলোচ্যসূচিতে থাকলেও বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং আসন্ন জাতীয় নির্বাচনও গুরুত্বপূর্ণ এজেন্ডা ছিল।
ভারতের সংবাদমাধ্যম দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশের সরকারি দলের সঙ্গে বিরোধী দলীয়দের টানাপোড়েন এবং বাংলাদেশে বাড়তে থাকা চীনের প্রভাব নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বেশ উদ্বিগ্ন এবং ‘টু প্লাস টু’ বৈঠকে এ বিষয়ে ভারতকে এগিয়ে আসতে নয়াদিল্লিকে আহ্বান জানিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।
সেই আহ্বানের জবাবেই এ ইস্যুতে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে ভারত।