সারা বিশ্ব টিকা নেওয়ার পরও অনেকে করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। যেতে হচ্ছে হাসপাতালেও। তবে গবেষণা বলছে, ফাইজার-বায়োএনটেক এবং মডার্নার টিকার দু’টি ডোজ নেওয়া বয়স্ক কোনো ব্যক্তি ফের করোনায় আক্রান্ত হলেও তাদের হাসপাতালে ভর্তির সম্ভাবনা কমে যায় ৯৪ শতাংশ।
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) প্রকাশিত নতুন গবেষণায় এই তথ্য সামনে এসেছে। দেশটিতে ফাইজার ও মডার্নার করোনা টিকা ব্যবহার করা হচ্ছে। গবেষণায় বলা হয়েছে, ফাইজার ও মডার্না টিকার দু’টি ডোজ নেওয়ার পরেও কেউ করোনায় আক্রান্ত হতে পারেন। সেক্ষেত্রে ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সী যারা এই টিকার দু’টি ডোজ নিয়েছেন তারা পরবর্তীকালে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হলেও তাদের হাসপাতালে ভর্তির সম্ভাবনা ৯৪ শতাংশ কম।
তবে যারা একটি টিকা নিয়েছেন, তাদের ক্ষেত্রে ফলাফল কী? গবেষণা বলছে, ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সীদের মধ্যে যারা টিকার একটি ডোজ নিয়েছেন, তারা আক্রান্ত হলে হাসপাতালে ভর্তির সম্ভাবনা ৬৪ শতাংশ কম।
করোনায় সংক্রমিত হলে বয়স্কদেরই স্বাস্থ্য ঝুঁকি বেশি। তাই আগে ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সীদের টিকা দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন দেশে। ইতোমধ্যেই আমেরিকার বয়স্ক জনসংখ্যার প্রায় ৬৮ শতাংশ মানুষকে টিকার দু’টি ডোজ দেওয়া সম্পন্ন হয়েছে। সংখ্যার হিসেবে যা তিন কোটি ৭০ লাখেরও বেশি।
এদিকে গবেষণার ফলাফলকে স্বাগত জানিয়ে সিডিসি’র ডিরেক্টর রচেল ওয়ালেনস্কি বলেছেন, ‘পরীক্ষার ফল আমাদের অনেক বেশি আশাবাদী করে তুলেছে। টিকা নেওয়া মানুষের সংখ্যা যত বাড়বে আক্রান্তদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার আশঙ্কা তত কমবে। এতে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর চাপ কমবে।’
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ব্রিটেনে করা অন্য একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ফাইজার ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার একটি টিকা নিলে বাড়ির মধ্যে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা প্রায় ৫০ শতাংশ কমে যায়।
বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৫ হাজার ২৮৪ জন। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৩১ লাখ ৬৩ হাজার ৮৭৩ জনে।
করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৩ কোটি ২৯ লাখ ৮৩ হাজার ৬৯৫ জন করোনায় আক্রান্ত এবং ৫ লাখ ৮৮ হাজার ৩৩৭ জন মারা গেছেন। করোনা প্রতিরোধে দেশটিতে ফাইজার ও মডার্নার টিকা প্রয়োগ করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর গত বছরের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি। বিশ্ব এখন করোনা মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলা করছে।