ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর বোমা বর্ষণে প্রতি ১০ মিনিটে একজন নিহত হচ্ছেন, আহত হচ্ছেন আরও ২ জন। জাতিসংঘের ত্রাণ বিতরণ সংস্থা ইউএন রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্কস এজেন্সি (আনরোয়া) নিশ্চিত করেছে এ তথ্য।
সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) এক বার্তায় আনরোয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘গাজায় গড়ে প্রতি ১০ মিনিটে একজন নিহত হচ্ছেন এবং আহত হচ্ছেন ২ জন। বেসামরিক লোকজনের ওপর বোমা বর্ষণ বন্ধ করা কোনো দয়া বা করুণার ব্যাপার নয়, বরং এটা বাধ্যবাধকতা এবং মানবতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধতা’।
৩৬৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের গাজা উপত্যকায় বসবাস করেন প্রায় ২৩ লাখ ফিলিস্তিনি। দারিদ্র্য ও বেকারত্বপীড়িত এই ভূখণ্ডের অন্তত এক তৃতীয়াংশ মানুষ জাতিসংঘ ও অন্যান্য দাতা দেশ ও সংস্থার ত্রাণ ও আর্থিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। আর এই সহায়তা কর্মসূচি মূলত তত্ত্বাবধান ও পরিচালনা করে আনরোয়া।
গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলের ভূখণ্ডে অতর্কিত হামলা চলানোর পর সেদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের বিমান বাহিনী। সেই অভিযান এখনও চলছে।
হামাসের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয়েছেন ১ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিক। এছাড়া হামলার প্রথম দিনই ইসরায়েল থেকে অন্তত ২৩৪ জনকে জিম্মি হিসেবে গাজায় ধরে নিয়ে গেছে হামাস।
অন্যদিকে, ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর অভিযানে গাজায় নিহতের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ১০ হাজার। এই নিহতদের অর্ধেকেরও বেশি শিশু ও নারী।
আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকদের মতে, ১৯৫৩ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর এই প্রথম এত বড় মাত্রার সংঘাত হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের আল-আকসা অঞ্চলে।
ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর হামলায় গত এক মাসে গাজা উপত্যকায় বাস্তুচ্যুত হয়েছেন অন্তত ১৫ লাখ মানুষ। তাদের মধ্যে প্রায় ৬ লাখ ৭০ হাজার মানুষ আনরোয়া পরিচালিত স্কুলগুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এবং জাতিসংঘ ইতমধ্যে গাজায় যুদ্ধবিরতির সোচ্চার আহ্বান জানিয়েছে।