ফেনীতে ভাঙচুর ও নাশকতার অভিযোগে করা মামলায় গত তিন দিনে বিএনপি ও জামায়াতের ৮০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। জেলার ৬ থানায় দায়ের করা ১২ মামলায় গ্রেপ্তার নেতাকর্মীদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বুধবার (১ নভেম্বর) জেলা পুলিশ সুপার জাকির হাসান ঢাকা পোস্টকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
এদিকে এসব মামলাকে গায়েবি দাবি করে দলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে জেলা বিএনপি।
পুলিশ সূত্র জানায়, গত তিন দিনে জেলার ৬ থানায় ভাঙচুর ও নাশকতার অভিযোগে ১২টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই মামলায় বুধবার (১ নভেম্বর) ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের মধ্যে ফেনী মডেল থানায় ৬ জন, ফুলগাজীতে ২ জন, পরশুরামে ২ জন, ছাগলনাইয়ায় ২ জন, সোনাগাজীতে ১ জন এবং দাগনভূঞা থানায় ১ জন রয়েছেন। এর আগে মঙ্গলবার ১৬ জন এবং সোমবার ৫০ জনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়।
সূত্র আরও জানায়, ফেনী মডেল থানার ৮টি, দাগনভূঞা থানায় একটি, সোনাগাজী মডেল থানায় একটি, ছাগলনাইয়া থানায় একটি ও ফুলগাজী থানায় একটিসহ মোট ১২টি মামলা দায়ের করা হয়।
ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম চৌধুরী জানান, বুধবার নতুন করে ফেনী মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজুর রহমান বাদি হয়ে ৩১ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেছেন। এছাড়া উপ-পরিদর্শক কোমল কুমার সাহা বাদি হয়ে ১০ জনকে আসামি করে আরেকটি মামলা করেন। তৃতীয় মামলাটির বাদি শহরের পূর্ব উকিলপাড়ার বাসিন্দা আবুল কালাম আজাদ। তিনি ৩৫ জনকে আসামি করে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে একটি মামলা করেছেন।
ছাগলনাইয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুদ্বীপ রায় জানান, নাশকতা ও ভাঙচুরের অভিযোগে আরো ২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে মামলা ও গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়ে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলাল ঢাকা পোস্টকে বলেন, গায়েবি মামলায় প্রতিদিন নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করছে। পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা জেলাজুড়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি তল্লাশি করছে। এভাবে হয়রানি ও গ্রেপ্তার অভিযানের তীব্র নিন্দা জানাই।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ ফরিদ বাহার বলেন, নিরপরাধ নেতাকর্মীদের গায়েবি মামলায় গ্রেপ্তার করছে পুলিশ। এভাবে হামলা, মামলা বা গ্রেপ্তার অভিযান চালিয়ে এই সরকারের পতন ঠেকানো যাবে না। গ্রেপ্তার সব নেতাকর্মীর নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।
ফেনী পুলিশ সুপার জাকির হাসান বলেন, সড়কে কেউ নাশকতার চেষ্টা করলে ছাড় দেওয়া হবে না। মহাসড়কে পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। গণপরিবহন ও সড়কে নির্বিঘ্নে যাতায়াতের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক টিম টহলরত রয়েছে। নাশকতা করে যেন কেউ বিশৃঙ্খলা করতে না পারে সেজন্য আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছি।