আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন যথাসময়ে হবে বলে জোর দিয়ে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, কে চোখ রাঙ্গালো আর কে চোখ বাঁকালো তা আমি পরোয়া করি না।
মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) বিকেলে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
কোনো বিদেশি শক্তি কি আমাদের নিয়ে চোখ রাঙ্গাচ্ছে, নির্বাচন কি যথাসময়ে হবে?— এমন প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন যথাসময়ে হবে এবং সময়মতো হবে। কে চোখ রাঙ্গালো আর কে বাঁকালো এ নিয়ে আমরা কোনো পরোয়ানা করি না। দেশের মানুষের ভোট ও ভাতের জন্য অনেক সংগ্রাম করেই কিন্তু গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছি। আর গণতন্ত্র থাকলে, নির্বাচিত সরকার থাকলে— বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সরকার থাকলে যে উন্নতি হয় এটা তো আপনারা বিশ্বাস করেন।
তিনি বলেন, মাত্র ১৪ বছরের দেশের অভূতপূর্ব যে উনয়ন ও পরিবর্তন হয়েছে তা দৃশ্যমান। এ উন্নয়ন যে শুধু ঢাকা শহরে মেট্রোরেল বা এলিভেটেট এক্সপ্রেসওয়ে নয় সারাদেশে তৃণমূলে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে গেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা প্রত্যেকটি উন্নয়ন পরিকল্পনা মাফিক করেছি। তৃণমূলের যে পরিবর্তন হয়েছে তা আপনারা নিজের দেখে আসেন। কাজেই কে চোখ রাঙ্গালো, কে বাঁকালো তাদের পরোয়া করার সময় নেই।
কোন শক্তি চোখ রাঙ্গাচ্ছে এই প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কে রাঙ্গাচ্ছে এটা আপনারা বুঝেন না। আমার বলতে হবে কেন?
সংলাপ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, কার সঙ্গে সংলাপ করবো। ট্রাম্প সাহেবের সঙ্গে কি বাইডেন সংলাপ করছে। যেদিন ট্রাম্পের সঙ্গে বাইডেন সংলাপ করবে সেদিন আমিও সংলাপ করবো।
গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামে অংশ নিতে গত ২৪ অক্টোবর সফরসঙ্গীদের নিয়ে বেলজিয়ামে যান প্রধানমন্ত্রী। গত ২৫ ও ২৬ অক্টোবর ওই ফোরামে যোগ দেন তিনি। ফোরামের ফাঁকে ইউরোপীয় দেশগুলোর নেতাদের সঙ্গে বেশ কয়েকটি বৈঠক করেন। বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার ডি ক্র ও লুক্সেমবার্গের প্রধানমন্ত্রী জেভিয়ার বেটেলের সঙ্গেও বৈঠক করেন শেখ হাসিনা।
সফরকালে ২৫ অক্টোবর ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন, নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং ইউরোপীয় বাণিজ্য কমিশনার ভালদিস ডোমব্রোভস্কিসের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। এসব বৈঠকের পর বাংলাদেশ সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) এবং ইউরোপীয় বিনিয়োগ ব্যাংকের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে ৩৫ কোটি ইউরোর একটি ঋণ সহায়তা, সাড়ে ৪ কোটি ইউরোর একটি অনুদান এবং একই খাতে বাংলাদেশ সরকার ও ইউরোপীয় কমিশনের মধ্যে ১ কোটি ২০ লাখ ইউরোর অনুদান চুক্তি সই হয়।
এছাড়া সামাজিক খাতের জন্য বাংলাদেশ সরকার ও ইউরোপীয় কমিশনের মধ্যে ৭ কোটি ইউরোর আরও পাঁচটি অনুদান চুক্তি হয়। ২৬ অক্টোবর বেলজিয়ামে বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসীদের দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানেও যোগ দেন তিনি। দুদিনের সফর শেষে ২৭ অক্টোবর দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী।