নরসিংদী রেলস্টেশনে ঢাকাগামী তিতাস কমিউটার ও আন্তনগর এগারসিন্দুর ট্রেনে তল্লাশি চালিয়ে রায়পুরা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমানসহ বেশ কয়েকজন যাত্রীকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার (২৮ অক্টোবর) সকাল ৭টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে তাদের আটক করা হয়। পরে প্রিজন ভ্যানে করে দুই দফায় তাদের থানায় নেওয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিএনপির শতাধিক কর্মী ঢাকাগামী তিতাস কমিউটার ট্রেনে ওঠার সময় পুলিশ বাধা দেয়। ওই সময় তারা রেললাইনের পাথর ছুড়ে মারলে পুলিশও ফাঁকা গুলি ছোড়ে। পরে বিএনপির কর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে শটগানের ৩৫ রাউন্ড গুলি ছোড়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সরেজমিন দেখা যায়, নরসিংদী মডেল থানার ওসি আবুল কাশেম ভূঁইয়ার নেতৃত্বে অন্তত ৫০ জন পুলিশ সদস্য সেখানে অবস্থান করছেন। তাদের সঙ্গে রয়েছেন নরসিংদী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরাও। অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য ট্রেন থামিয়ে তারা ভেতরে ঢুকে যাত্রীদের তল্লাশি করছেন। একে একে সন্দেহভাজনদের আটক করে স্টেশনের ভিআইপি কক্ষে এনে রাখা হচ্ছিল। পরে প্রিজন ভ্যান আনিয়ে দুই দফায় তাদের থানায় নেওয়া হয়। ট্রেনের যাত্রীদের মধ্যে যাদের আটক করা হয়েছে, তাদের অধিকাংশই যুবক।
তল্লাশি কার্যক্রম বিষয়ে নেওয়া মডেল থানার উপপরিদর্শক অভিজিৎ চৌধুরী বলেন, ‘বিনা টিকিটের যাত্রীদের আমরা ট্রেন থেকে নামিয়ে দিচ্ছি। পাশাপাশি ঢাকায় বিএনপি ও জামায়াতের মহাসমাবেশে অংশ নিয়ে নাশকতা করতে পারেন এমন সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের আটক করা হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।’
রেলস্টেশনে আটক ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন রায়পুরা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান। তাকে স্টেশনটির ভিআইপি কক্ষে রাখা অবস্থায় এই প্রতিবেদক কথা বলার চেষ্টা করেন। পুলিশি বাধার কারণে তার বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি। তবে আটক কয়েকজন দাবি করেন, তারা কোনো সমাবেশে যোগ দিতে ঢাকায় যাচ্ছিলেন না। ব্যক্তিগত ও পারিবারিক প্রয়োজনে তারা ঢাকায় রওনা হয়েছিলেন।
স্টেশনে অবস্থানরত কয়েকজন যাত্রী জানান, যারা সমাবেশে যোগ দেবেন, তারা তো দু-এক দিন আগেই ঢাকায় পৌঁছে গেছেন। পুলিশ অযথা তল্লাশির নামে তাদের হয়রানি করছে। নরসিংদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাশেম ভূঁইয়া বলেন, ‘বিএনপির শতাধিক কর্মী ট্রেনে উঠতে না পেরে পুলিশের দিকে রেললাইনে পাথর ছুড়ে মারেন। এতে তিন পুলিশ সদস্য আহত হন। পরে জনগণের জানমাল রক্ষায় শটগানের ৩৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়। ঢাকায় সমাবেশকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে, সে জন্যই তল্লাশি চালানো হচ্ছে। নাশকতার সন্দেহে যাদের আটক করা হয়েছে, যাচাই-বাছাই শেষে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে মামলা করা হবে।’