আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বিশ্বের ১৪২টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১২৭তম। আগের বছর ১৪০টি দেশের মধ্যে একই অবস্থানে ছিল বাংলাদেশ। তবে সূচকে গতবারের তুলনায় বাংলাদেশের স্কোর কমেছে শূন্য দশমিক ১ পয়েন্ট। বর্তমান স্কোর শূন্য দশমিক ৩৮, যা আগের বছর ছিল শূন্য দশমিক ৩৯। এছাড়া এবারও দক্ষিণ এশিয়ার ছয় দেশ (নেপাল, শ্রীলঙ্কা, ভারত, আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ) এর মধ্যে সূচকে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ।
বিশ্বের ১৪২টি দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি জরিপকারী যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়ার্ল্ড জাস্টিস প্রোজেক্টের (ডব্লিউজেপি) ২০২৩ সালের সূচকে এই তথ্য জানানো হয়। বুধবার বৈশ্বিক আইনের শাসন সূচক প্রকাশ করে ডব্লিউজেপি।
সূচকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে বরাবরের মতই বৈশ্বিকভাবে শীর্ষে অবস্থান করছে ইউরোপের স্ক্যান্ডিনেভীয় অঞ্চলের তিন দেশ—ডেনমার্ক, নরওয়ে ও ফিনল্যান্ড। তালিকায় শূন্য দশমিক ৯০ স্কোর নিয়ে শীর্ষে আছে ডেনমার্ক, তারপর নরওয়ে (শূন্য দশমিক ৮৯) ও ফিনল্যান্ড (শূন্য দশমিক ৮৭)।
অপরদিকে, সর্বনিম্নে অবস্থানকারী তিন দেশ হলো- ভেনেজুয়েলা, কম্বোডিয়া ও আফগানিস্তান। আইনের শাসনের সবচেয়ে খারাপ অবস্থা ভেনেজুয়েলা (শূন্য দশমিক ২৬), কম্বোডিয়া (শূন্য দশমিক ৩১), আফগানিস্তান (শূন্য দশমিক ৩২)।
দক্ষিণ এশিয়ার ছয় দেশের শীর্ষে অবস্থান করছে নেপাল। দশমিক ৫২ পয়েন্ট অর্জনকারী এই দেশটি আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার সূচকে বৈশ্বিকভাবে রয়েছে ৭১তম অবস্থানে। এছাড়া ৭৯তম অবস্থানে ভারত ও ৭৭তম অবস্থানে রয়েছে শ্রীলঙ্কা। পাকিস্তান ও আফগানিস্তান রয়েছে সূচকের একদম শেষদিকে। এই দেশ দুটির অবস্থান যথাক্রমে ১৩০তম ও ১৪০তম।
ডব্লিউজেপি এবার আটটি বিষয় বিবেচনায় এনে আইনের শাসনের এই সূচক তৈরি করেছে। এর মধ্যে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার সীমাবদ্ধতার দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান ১২০তম, নিয়ন্ত্রণমূলক ক্ষমতার প্রয়োগের দিক থেকে ১২৬তম, মৌলিক অধিকারের দিক থেকে ১৩৭তম, ফৌজদারি বিচারের দিক থেকে ১২৩তম, দেওয়ানি বিচার পাওয়ার দিক থেকে ১৩৩তম, দুর্নীতি না হওয়ার দিক থেকে ১১৭তম, জননিরাপত্তায় ১০৮তম ও সরকারি তথ্য প্রকাশের দিক থেকে ১০৬তম অবস্থানে আছে।
ডব্লিউজেপি জানিয়েছে, বাংলাদেশসহ ৫৯ শতাংশ দেশে আইনের শাসনের অবনতি হয়েছে। এছাড়া ২০১৬ সাল থেকে ৭৮ শতাংশ দেশে আইনের শাসনের অবনতি হয়েছে। একই সঙ্গে ৭৮ শতাংশ দেশে মৌলিক অধিকারও তলানিতে গেছে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ১ লাখ ৩৯ হাজার থানা ও ৩ হাজার ৪০০ জন আইনজীবী ও বিশেষজ্ঞের মতামত নিয়ে এ সূচক করেছে ডব্লিউজেপি।