চলমান ওয়ানডে বিশ্বকাপের ১৪তম ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে সাবেক দুই বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া ও শ্রীলঙ্কা। দুই দলেরই এটি তৃতীয় ম্যাচ। অন্যদিকে প্রথম জয়ের খোঁজে মাঠে নেমেছে উভয়ই। এমন ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করতে নামা শ্রীলঙ্কাকে মাত্র ২০৯ রানে গুটিয়ে দেয় অজিরা। সেই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ওপেনার মিচেল মার্শ ও জশ ইংলিসের অর্ধশতকে ৮৮ বল হাতে রেখেই ৫ উইকেটের জয় তুলে নেয় প্যাট কামিন্সের দল।
শ্রীলঙ্কার দেয়া ২১০ রানের লক্ষ্যে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ওপেনিং নামেন মিচেল মার্শ ও ডেভিড ওয়ার্নার। এই দুইজন দেখে শুনে খেলে ভালো শুরু এনে দেন। উদ্বোধনী জুটিতে অজি এই দুই ব্যাটার করেন ২৪ রান। দলীয় ৩.১ ওভারের দিলশান মাদুসাংকা বলে এলবিডব্লিউ হয়ে প্যাভিলিয়নের পথে হেঁটে যান ওয়ার্নার। যাওয়ার আগে তিনি করেন ৬ বলে ১১ রান।
এরপর দ্বিতীয় উইকেটে মাঠে নামেন স্টিভেন স্মিথ। তিনি রানের খাতা খোলার আগে আউট হয়ে সাজঘরের পথ ধরেন। দলীয় ৩.৬ ওভারের দিলশান মাদুশঙ্কার বলে এলবিডব্লিউ হয়ে প্যাভিলিয়নের পথে হেঁটে যান স্মিথ। স্মিথ চলে যাওয়ায় অপর প্রান্তে আগলিয়ে থাকেন মিচেল মিচেল মার্শ। দেখে শুনে খেলে ক্যারিয়ারের ১৮তম অর্ধশতক পূর্ণ করেন তিনি। ফিফটির পর অবশ্য থিতু হতে পারেননি উইকেটে।
দলীয় ৮১ রানে মহেশ থিকশানার বলে সিঙ্গেল নিতে গিয়ে রান আউটের ফাঁদে পড়ে প্যাভিলিয়নের পথে হেঁটে যান মার্শ। যাওয়ার আগে ৫১ বলে ৫২ রান করেন তিনি। এরপর মাঠে নামেন জশ ইংলিস। তাকে সঙ্গে নিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন মার্নাস লাবুশেন। এই দুই জনে ৭৭ রানের জুটি গড়ে জয়ের ভিত গড়ে দেয়। তবে দলীয় ১৫৮ রানে অর্ধশত রান হতে ১০ দূরে থাকতে আউট হন লবুশেন। ৬০ বলে ৪০ করেন।
লাবুশেষন আউট হলেও উইকেটে থিতু হয়ে রানের চাকা সচল রাখেন ইংলিস। তবে দলীয় ১৯২ রানে ৫৮ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরের পথ ধরেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ৩৫.২তম ওভারেই ৮৮ বল হাতে রেখে ৫ উইকেটের দাপুটে জয় তুলে নেয় অজিরা। বল হাতে লঙ্কানদের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন দিলশান মাদুসাংকা।
এর আগে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে শ্রীলঙ্কার হয়ে ইনিংস উদ্বোধন করেন কুশল পেরেরা ও পাথুম নিশাঙ্কা। দুইজনেই অজি বোলারদের দেখে শুনে খেলতে থাকেন। দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে দলীয় শতরান পার করে এই দুই ওপেনার। সেই সঙ্গে পেরেরা ও পাথুম মিলে গড়েন শতরানের জুটি। তাতে উদ্বোধনী জুটিতে দারুণ শুরু করে লঙ্কানরা।
দলীয় শতরান পার করার পথে ব্যক্তিগত ১৬তম অর্ধশত রানের দেখা পান পিচে থিতু হওয়া পেরেরা। দলীয় ১৮.৩ ওভারের মার্কাস স্টয়নিসের বলে চার মেরে ফিফটি পূরণ করেন কুশল। কুশলের অর্ধশতক হওয়ার পর ওপেনিংয়ে নামা পাথুম নিশাঙ্কাও নিজের অর্ধশতক তুলে নেন। কুশালের পর তিনিও ক্যারিয়ারের ১১তম ফিফটি পূর্ণ করেন। ফিফটির পর আক্রমনাত্মক ব্যাটিং করতে থাকেন নিশাঙ্কা। তাতে ব্যক্তিগত ইনিংস বড় করতে পারেননি লঙ্কান এই ব্যাটার।
দলীয় ২১.৪ ওভারে প্যাট কামিন্সের বলে ডেভিড ওয়ার্নারের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরেন নিশাঙ্কা। যাওয়ার আগে তিনি খেলেন ৬৭ বলে ৬১ রানের ইনিংস। এরপর মাঠে নামে কুশল মেন্ডিস। নিশাঙ্কার বিদায়ের পর ব্যক্তিগত ইনিংস বাড়ানোর চেষ্টা করে পিচে থিতু হতে থাকেন কুশল পেরেরা। কিন্তু ব্যক্তিগত ইনিংস বাড়ানোর চেষ্টায় ব্যর্থ হন তিনি। দলীয় ২৬.২ ওভারে প্যাট কামিন্সের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরেন কুশল। ফেরার আগে ৮২ বলে ৭৮ রান করেন তিনি।
দুই ওপেনারের বিদায়ের পর স্কোরবোর্ডে ১৮ রান যোগ করতেই দ্রুত আরও তিন উইকেট হারিয়ে বসে শ্রীলঙ্কা। এর মধ্যে অ্যাডাম জাম্পার বলে এলবিডব্লিউ হয়েছেন সাদিরা সামারাবিক্রমা, মিচেল স্টার্কের বলে বোল্ডের শিকার ধনঞ্জয় ডি সিলভা এবং রান আউটের ফাঁদে পড়ে সাজঘরে ফিরে যান দুনিথ ওয়েল্লালাগে। এতে বড় রানের সংগ্রহের পথে এগতে থাকা লঙ্কানরা বিপাকে পরে লড়াকু পুজি সংগ্রহ করতে।
শেষ দিকে চারিথ আসালঙ্কার ২৫ রানের ক্যামিও ইনিংসে ৪৩.৩ ওভারে ২০৯ রানে অলআউট হয় কুশাল মেন্ডিসের দল। বল হাতে অজিদের হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন অ্যাডাম জ্যাম্পা।