এবারের বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয় পেয়েছে আফগানিস্তান। ওয়ানডের বর্তমান চ্যাম্পিয়নের বিরুদ্ধে ৬৯ রানের দুর্দান্ত জয় পায় তারা। এর ফলে বিশ্বকাপের মঞ্চে প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের স্বাদ পেল রশিদ খানরা।
আফগানিস্তানের দেওয়া ২৮৫ রানের টার্গেট তাড়ায় নেমে শুরু থেকেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে ইংল্যান্ড। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই ইংল্যান্ড শিবিরে আঘাত হানেন ফজল হক ফারুকি। তার বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন ওপেনার জনি বেয়ারস্টো। দলীয় ৩৩ রানে ফেরেন জো রুট। ইংল্যান্ডের সাবেক এই অধিনায়ক মুজিব উর রহমানের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন।
দুই উইকেট পতনের পর হ্যারি ব্রুককে সঙ্গে নিয়ে উইকেটে থিতু হয়ে দেখেশুনে খেলতে থাকেন আরেক ওপেনার ডেভিড মালান। তবে উইকেটে বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে পারেননি তিনিও। দলীয় ৬৮ রানে মোহাম্মদ নবীর বলে এলবিডব্লিউ ফাঁদে পড়ে সাঝঘরে পথে ফেরেন তিনি। ৩৯ বলে ৩২ রান করেন তিনি।
মালান চলে যাওয়া ইংল্যান্ড শিবিরে আরও চাপ বাড়তে থাকলে চতুর্থ উইকেটে ইংলিশ অধিনায়ক জস বাটলারে কাঁধে পরে দায়িত্ব। ২২ গজে আজ ব্যর্থ হন তিনি। দলীয় ৯১ রানে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। ইংলিশ এই অধিনায়ক দুই অংকের ঘরই পার করতে পারেনি আজ। এরপর পাঁচে ব্যাট করতে নামা লিয়াম লিভিংস্টোনও বেশিক্ষণ পিচে থিতু হতে পারেননি। রশিদ খানে বলে এলবিডব্লিউ ফাঁদে পড়ে প্যালভিলিয়নের পথে হাঁটা দেন তিনি।
লিভিংস্টোন করেন ১০ রান। নিয়মিত বিরতিতে উইকেটে হারাতে থাকা ইংলিশ ব্যাটাররা আর ম্যাচের হাল ধরতে পারেননি। শেষ দিকে আদিল রশিদের ক্যামিও শুধু হারের ব্যবধান কমিয়েছে। শেষ পর্যন্ত ৪০.৩ ওভারে ২১৫ রানে অলাউট হয়ে যায় জস বাটলারের দল। ইংল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ রান করেছেন হ্যারি ব্রুক। ৬১ বল খেলে সাতটি চার ও একটি ছক্কার সাহায্যে তিনি সর্বোচ্চ ৬৬ রান করেন তিনি। এছাড়া আদিল রশিদ ২০ ও মার্ক উডের ১৮ রান ছিল উল্লেখযোগ্য।
আফগানিস্তানের পক্ষে মুজিব উর রহমান ও রশিদ খান সর্বোচ্চ তিনটি করে উইকেট নেন। এছাড়া মোহাম্মদ নবী দুটি উইকেট নেন।
এর আগে ভারতের দিল্লির অরুন জেটলি স্টেডিয়ামে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ২৮৪ রানে অলআউট হয় আফগানিস্তান।
ব্যাটিংয়ে নেমেই উড়ন্ত সূচনা করে দুই আফগান ব্যাটার। কোনো উইকেট না হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ১১৪ রান জমা করেন দুই ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও ইবরাহিম জাদরান। এরপর হঠাৎ ব্যাটিং বির্পযয়ে পড়ে আফগানিস্তান। মাত্র ৭৬ রানের ব্যবধানে ৬ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে তারা।
৫৭ বলে ৮টি চার আর ৪টি ছক্কায় ৮০ রান করে ফেরেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ। ৪৮ বলে ২৮ রানে ফেরেন ইবরাহিম জাদরান।
এরপর রশিদ খানকে নিয়ে দলকে মেরামতের দায়িত্ব নেন ইকরাম আলী খিল। সপ্তম উইকেট জুটিতে রশিদ খানকে নিয়ে ৪৮ বলে ৪৩ রানের জুটি গড়েন ইকরাম। ২২ বলে ৩টি বাউন্ডারির সাহায্যে ২৩ রান করে ফেরেন রশিদ খান। এরপর মুজিব উর রহমানের সঙ্গে মাত্র ২৩ বলে ৪৪ রানের জুটি গড়ে ফেরেন ইকরাম। তিনি ৬৬ বলে তিনটি চার আর ২টি ছক্কার সাহায্যে ৫৮ রান করে ফেরেন।
দলীয় ২৭৭ রানে নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে ফেরেন মুজিব। তার আগে মাত্র ১৬ বলে তিন চার আর এক ছক্কায় খেলেন ২৮ রানের ঝড়ো ইনিংস। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে ফজলহক ফারুকি আউট হওয়ার মধ্য দিয়ে ৪৯.৫ ওভারে ২৮৪ রানে অলআউট হয় আফগানিস্তান। ইংল্যান্ডের হয়ে আদিল রশিদ তিনটি, মার্ক উড দুটি উইকেট নেন।
আজকের ম্যাচ জিতে এবারের বিশ্বকাপ আসরে প্রথম পেল আফগানরা। এছাড়া ২০১৫ সালের পর বৈষয়িক আসরে দ্বিতীয় জয় আফগানদের। অন্যদিকে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম জয়ের দেখা পায় রশিদ খানরা।