ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। আর এই হামলার জেরে অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে প্রতিশোধমূলক হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। গত শনিবার থেকে শুরু হওয়া এই হামলায় ভূখণ্ডটিতে ৬ হাজার বোমা ফেলেছে ইসরায়েল।
এই পরিস্থিতিতে গাজায় চলমান হামলা নিয়ে ইসরায়েলকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরান। দেশটি বলেছে, ইসরায়েল যদি অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে বোমাবর্ষণ অব্যাহত রাখে তাহলে চলমান সংঘাত ‘অন্যান্য ফ্রন্টেও’ শুরু হতে পারে।
শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় যদি ইসরায়েলের বোমাবর্ষণ অব্যাহত থাকে তবে চলমান যুদ্ধ ‘অন্যান্য ফ্রন্টে’ শুরু হতে পারে বলে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান বলেছেন। আর এর মাধ্যমে তিনি লেবাননের সশস্ত্র প্রতিরোধ গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর কথাই উল্লেখ করেছেন।
আল জাজিরা বলছে, হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান বৃহস্পতিবার গভীর রাতে বৈরুতে পৌঁছান। সেখানে লেবাননের কর্মকর্তাদের পাশাপাশি হামাস এবং ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদের প্রতিনিধিরা তাকে স্বাগত জানান।
লেবাননের রাজধানীতে পৌঁছে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান। সেখানে তিনি বলেন, ‘গাজায় অব্যাহত আগ্রাসন, যুদ্ধাপরাধ এবং অবরোধের আলোকে চলমান সংঘাত অন্যান্য ফ্রন্টে শুরু হওয়ার বাস্তব সম্ভাবনা রয়েছে।’
আমির-আব্দুল্লাহিয়ান লেবাননের আগে ইরাক সফর করেছেন এবং আঞ্চলিক সফরের অংশ হিসাবে এই সপ্তাহের শেষের দিকে সিরিয়ায় গিয়ে তিনি আলোচনা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
আল জাজিরা বলছে, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এমন এক সময়ে বৈরুত সফর করছেন যখন লেবাননের দক্ষিণ সীমান্তে তেহরানের মিত্র হিজবুল্লাহ এবং ইসরায়েলের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এদিকে হিজবুল্লাহর একটি ড্রোন ইসরায়েলে গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, লেবানন-ইসরায়েল সীমান্তে উত্তেজনা বাড়ার সাথে সাথে হিজবুল্লাহ বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের ওপর একটি ড্রোন উড়িয়েছে।
পরিস্থিতি সম্পর্কে জানেন এমন একজন লেবানিজ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, হিজবুল্লাহর ওই ড্রোনটি ইসরায়েলের ওপর গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে।
ইসরায়েলের একজন সামরিক মুখপাত্র বৃহস্পতিবার বিকেলে সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে একটি আকাশ-প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছিল, কিন্তু পরে দেখা গেছে যে সেখানে কোনও লক্ষ্যবস্তু ছিল না।
এছাড়া ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে অবস্থান নেওয়ার জন্য ঐকমত্যে পৌঁছাতে বিশ্বের মুসলিম দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ।
বৃহস্পতিবার এই দুই প্রেসিডেন্ট টেলিফোনে চলমান হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ নিয়ে কথা বলেন। এ সময় ইব্রাহিম রাইসি সিরিয়ার প্রেসিডেন্টকে বলেন, ‘ইসলামী ও আরব দেশগুলোর পাশাপাশি বিশ্বের সকল স্বাধীন জনগণকে নির্যাতিত ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইহুদিবাদী শাসকদের অপরাধ থামাতে একটি অবস্থানে পৌঁছাতে হবে।’