নীলফামারীতে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিচয়ে সজল ইসলাম নামে এক যুবককে অপহরণ করে অর্থ আদায়ের অভিযোগে সাবেক ছাত্রলীগের তিন নেতাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) বিকেলে আদালতে মাধ্যমে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- জেলা ছাত্রলীগের সাবেক ত্রাণ ও দুর্যোগ বিষয়ক সম্পাদক ও পৌর শহরের সওদাগড়পাড়া এলাকার মৃত আলিমুজ্জামান মিলনের ছেলে নাদিফ জামান ঊষা (২৪), বাড়াইপাড়ার মৃত আব্দুল ওহাবের ছেলে তানভীর আহম্মেদ প্রান্ত (২৩) ও ডালপট্টি এলাকার নেয়ামত আহমেদের ছেলে ফজলে রাব্বী(২৩)। তারাও জেলা ছাত্রলীগের সক্রিয় সাবেক কর্মী ছিলেন বলে জানা গেছে।
পুলিশ জানায়, গতকাল বুধবার দুপুর ২টা ৩০ মিনিটের দিকে সদর উপজেলার চাপড়া সরমজানি যাদুরহাট এলাকার নূর ইসলামের ছেলে সজল ইসলাম ইসলামী ব্যাংকের নীলফামারী শাখায় ৫০ হাজার টাকা জমা দেওয়ার জন্য ইজিবাইকে করে শহরের চৌরঙ্গীর মোড়ে নামেন। এ সময় দুজন ব্যক্তি এসে সজলের নাম ও ঠিকানা জিজ্ঞাসা করে নিজেদের ডিবি বলে পরিচয় দেন।
পরে তাকে ডিবি পুলিশের বড় কর্মকর্তার কাছে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। তখন সজল প্রতিবাদ করলে সেখানে থাকা রিকশাওয়ালা ও পথচারী লোকজন জড়ো হতে থাকে। এরপর সেই দুই ব্যক্তি সজলকে জোর করে একটি রিকশায় উঠিয়ে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক সংলগ্ন গলি দিয়ে পূর্ব দিকের পুকুর পাড়ে নিয়ে যান। সেখানে আরও দুই জন ব্যক্তি মোটরসাইকেলে এসে সজলকে জোর করে একটি বাঁশঝাড়ে নিয়ে যায়। পরে সজলের কাছে থাকা ৫০ হাজার টাকা ও তার বিকাশে থাকা ৬৫০ টাকা ক্যাশ আউট করে নেয়। একপর্যায়ে ভুক্তভোগী সজলের হাতে নেশা জাতীয় কিছু ধরিয়ে দিয়ে মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করেন তারা।
এরপর তারা সজলের কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা পায় মর্মে ১০০ টাকা মূল্যের ৩টি নন জুডিসিয়াল ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে তার ভিডিও ধারণ করেন। এরপর ওইদিন সন্ধ্যার দিকে খোঁজ পেয়ে ভুক্তভোগী সজলকে স্থানীয়রা উদ্ধার করেন। পরে সজল নিজে বাদি হয়ে থানায় চারজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১০ থেকে ১৫ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করেন। এ ঘটনায় নীলফামারী থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে।
এ সময় নাদিফ জামান উষার ব্যবহৃত মোবাইল থেকে জোর করে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়ার ১৯টি ভিডিও সহ আরও ভিডিও পাওয়া যায়। এ ছাড়া তার কাছ থেকে একটি ব্যবহৃত হ্যান্ডকাফ ও আসামি তানভির আহম্মেদের কাছ থেকে অপহরণ কাজে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।
নীলফামারী সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) তানভীরুল ইসলাম বলেন, অভিযোগের পরেই বুধবার রাতে অভিযান চালিয়ে তিনজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।