ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের হামলার পর গত রোববার থেকে গাজার ওপর ‘সর্বাত্মক অবরোধ’ আরোপ করেছে ইসরায়েল। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়োয়াভ গালান্ট ঘোষণা দিয়েছেন, গাজাকে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন করার পাশপাশি ওই অঞ্চলে খাদ্য বা জ্বালানি কোনো কিছুই প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।
কিন্তু এর সঙ্গে একমত নয় জাতিসংঘ। সংস্থাটির মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস সামাজিক মাধ্যমে এক পোস্টে বলেন, গাজা উপত্যকায় খাদ্য, জ্বালানি এবং পানির মতো জীবন রক্ষাকারী প্রয়োজনীয় জিনিসের অবশ্যই প্রবেশ করার অনুমতি দিতে হবে।
ইসরায়েল গাজায় সম্পূর্ণ অবরোধ আরোপ করছে। জাতিসংঘের আইন অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধ হিসেবে বিবেচিত। এই সর্বাত্মক অবরোধকে যুদ্ধাপরাধ ও আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে জাতিসংঘ। সংস্থাটির মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার ভল্কার তুর্ক মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলেন, গাজা উপত্যকার মানবিক পরিস্থিতি এমনিতেই খারাপ ছিল। ফলে সর্বাত্মক অবরোধ আরোপে সেখানকার পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে পড়বে।
২০০৭ সাল থেকেই বায়ু, স্থল ও সমুদ্র তিন দিক থেকেই ইসরায়েলি অবরোধের মুখে রয়েছে গাজা। এক বিবৃতিতে ভল্কার তুর্ক বলেন, গাজায় ইসরায়েলি হামলায় প্রতি মুহূর্তে হতাহত মানুষের সংখ্যা বাড়তে থাকায় আহতদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।
এদিকে বুধবার (১২ অক্টোবর) জ্বালানির অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে গাজার একমাত্র বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদন। এর ফলে অন্ধকারে ডুবে গেছে হামাস-নিয়ন্ত্রিত এলাকাটি। স্থানীয় সময় দুপুর ২টার দিকে বাসিন্দারা বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হওয়ার চূড়ান্ত সতর্কবার্তা পান। এর এক ঘণ্টা পরেই অন্ধকার হয়ে যায় সব কিছু।
বিদ্যুৎ না থাকায় গাজার হাসপাতালগুলোকে এখন কেবল জেনারেটরের ওপর ভরসা করে চলতে হবে। সেটিও চালানো যাবে আর বড়জোর দুই থেকে চারদিন। এরপর শেষ হয়ে যাবে সব জ্বালানি। বিদ্যুৎ না থাকা অর্থ, উপত্যকায় পানি সরবরাহ বন্ধ থাকবে। বহুতল ভবনগুলোতে আর কাজ করবে না লিফট। ফলে পুরোপুরি অন্ধকারে কাটাতে হবে গাজার ২৩ লাখ বাসিন্দাকে।