শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি, বরাদ্দকৃত অর্থের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সমতাভিত্তিক গুণগত শিক্ষা নিশ্চিত করাসহ সরকারের কাছে ১০ দফা সুপারিশ করেছে ‘ওয়েভ ফাউন্ডেশন’।
মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) ‘দ্য সাউথ এশিয়ান অ্যাসেসমেন্ট অ্যালায়েন্স: কমিউনিকেটিং অ্যান্ড কোলাবোরেটিং ফর চেঞ্জ’ প্রকল্পের কর্মসূচি ব্যবস্থাপক লিপি আমেনা এই সুপারিশগুলো তুলে ধরেন।
জরিপের উঠে আসা বিভিন্ন বিষয়বস্তু নিয়ে রাজধানীর গ্রিন লাউঞ্জ রেস্টুরেন্টে মতবিনিময় সভায় ওয়েভ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক মহসিন আলী, সুশাসন অধিকার ও ন্যায্যতা কর্মসূচির উপ-পরিচালক কানিজ ফাতেমা এবং যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংস্থা স্ট্রিট চাইল্ডের কর্মসূচি ব্যবস্থাপক ইমতিয়াজ হৃদয় উপস্থিত ছিলেন।
সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে- শিক্ষকদের ক্লাসে নিয়মিতকরণে মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা; শিক্ষার গুণগত মান অর্জনে শ্রেণির পাঠদান শ্রেণিতেই সম্পন্ন করা; অবকাঠামোগত উন্নয়ন পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ ও স্যানিটেশনেরে ব্যবস্থা করা; শিক্ষার মান উন্নয়নে শিক্ষকদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা; শিক্ষার্থী অনুপাতে শিক্ষক সংখ্যা বাড়ানোর জন্য উদ্যোগ গ্রহণ; পাঠ্যপুস্তকসহ অন্যান্য শিক্ষা উপকরণ তৈরি ও বিতরণ করা; স্কুল ফিডিং কার্যক্রম প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিশেষ করে দুর্যোগপ্রবণ এলাকাতে চালু করা এবং গুণগত শিক্ষার মান উন্নয়নে নীতি নির্ধারক, শিক্ষক ও অভিভাবকসহ সকল অংশীজনের মতামতের আলোকে কর্ম পরিকল্পনা গ্রহণ করা।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মূল্যায়ন হলো একটি শিক্ষাক্রমের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ। জাতীয় প্রয়োজন এবং পরিবর্তিত বিশ্বব্যবস্থার সঙ্গে খাপ খাইয়ে সময়ের ব্যবধানে শিক্ষাক্রমে এই অংশ পরিমার্জিত হয়। শিক্ষাক্রমের উদ্দেশ্য সফল হচ্ছে কি না তথা শিক্ষার্থীর মধ্যে সেই কাঙ্ক্ষিত যোগ্যতা ও দক্ষতা তৈরি হচ্ছে কি না তা যাচাই করা হয় সঠিক মূল্যায়নের মাধ্যমে। আর এটি নিশ্চিত করা হয় শিক্ষা কার্যক্রমের বিভিন্ন ধাপে, যাতে শিক্ষার্থীর যোগ্যতা ও দক্ষতা সঠিকভাবে নিরূপণ করা যায়।
এক্ষেত্রে মূল্যায়ন পদ্ধতিতে চলমান শিক্ষা কার্যক্রম এবং প্রশিক্ষণ থেকে প্রাপ্ত সুপারিশকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নেওয়া হয় এবং মূল্যায়নের কাঙ্ক্ষিত উদ্দেশ্য নিশ্চিত করা হয়। বেসরকারি নাগরিক সমাজের সংগঠন ওয়েভ ফাউন্ডেশন বহুমুখী কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় উন্নয়ন সহযোগী স্ট্রিট চাইল্ডের আর্থিক সহযোগিতায়, ২০২১ সাল থেকে ‘দ্য সাউথ এশিয়ান অ্যাসেসমেন্ট অ্যালায়েন্স: কমিউনিকেটিং অ্যান্ড কোলাবোরেটিং ফর চেঞ্জ’ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।
প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য নাগরিক উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের পঠন ও শিখন যাচাই এবং মূল্যায়ন করা। পাশাপাশি, জরিপের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে সবার জন্য সমান সুযোগ, অভিগম্যতা ও শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করার জন্য স্থানীয় এবং জাতীয় পর্যায়ে অ্যাডভোকেসি করা। ইতোমধ্যে খুলনা এবং রাজশাহীতে ‘নাগরিক কর্তৃক পরিচালিত মূল্যায়ন’ নামক একটি জরিপ পরিচালনা করা হয়েছে।
নাগরিক সম্পৃক্ততা ও বিভিন্ন উদ্যোগ এবং শিক্ষার গুণগতমান নিশ্চিতকরণে উন্নত প্রশিক্ষণ, শিক্ষার্থীদের পঠন ও গাণিতিক শিখন যাচাই ও মূল্যায়ন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে, শিখন পদ্ধতির এই মূল্যায়ন জরিপের ফলাফল ও সংশ্লিষ্ট সুপারিশ সরকারের কাছে তুলে ধরে সমাধান করার জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে সকলকে একত্রিত হয়ে কাজ করার কথা এই মতবিনিময় সভায় জোরালোভাবে উঠে এসেছে।
মহসিন আলী বলেন, আমাদের যার যার দৃষ্টিভঙ্গি আলাদা। তবে কিছু বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আমাদের সম্মিলিতভাবে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখতে হবে।