আগামী ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে একক ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের বিষয়ে দ্রুত একটি অধ্যাদেশ জারির সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কর্মিশন (ইউজিসি)।
মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) একক ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনে ইউজিসি কর্তৃক গঠিত কমিটির অনুষ্ঠিত সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
গত জুলাই মাসে একক ভর্তি পরীক্ষা নিতে ইউজিসি চেয়ারম্যানকে আহ্বায়ক করে ১৫ সদস্যের একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠন করা হয়।
সভায় সিদ্ধান্ত হয়, দেশের সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কে একক আওতাভুক্ত করে ভর্তি পরীক্ষা গ্ৰহণের জন্য একটি অধ্যাদেশ জারি করা প্রয়োজন। ন্যাশনাল টেস্টিং অথোরিটি (এনটিএ) গঠনের আগ পর্যন্ত এই অধ্যাদেশ অনুযায়ী ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে। ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় আইনে যাই থাকুক না কেন এই অধ্যাদেশ প্রাধান্য পাবে। এছাড়া কমিশনের একজন সদস্যের নেতৃত্বে গঠিত একটি কমিটিকে অধ্যাদেশের খসড়া তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়।
ইউজিসি চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীরের সভাপতিত্বে সভায় আরও ছিলেন- কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. বিশ্বজিৎ চন্দ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মাকসুদ কামাল, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীন আখতার, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. নূরুল আলম, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এমদাদুল হক চৌধুরী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শেখ আবদুস সালাম, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. কামালউদ্দিন, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের উপ-উপাচার্য ড. খোন্দকার মোকাদ্দেম হোসেন এবং ইউজিসি সচিব ড. ফেরদৌস জামান।
সভায় প্রফেসর আলমগীর বলেন, রাষ্ট্রপতি দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য। তার অভিপ্রায় অনুযায়ী জনস্বার্থে একক ভর্তি পরীক্ষা বিষয়ে যে আদেশ জারি করা হয়েছে সেটি বাস্তবায়নে সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং শিক্ষকদের ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে কাজ করার তিনি আহ্বান জানান।
প্রফেসর আলমগীর বলেন, কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যের অভিপ্রায়ের বা আদেশের বাইরে গিয়ে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের কোনো সুযোগ নেই।
সভায় উপস্থিত সদস্যরা একক ভর্তি পরীক্ষার বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বলেন, একক ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সদিচ্ছা। এ লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আচার্য ও রাষ্ট্রপতি একটি অধ্যাদেশ জারি করতে পারেন, যা বাস্তবায়নে দেশের প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নেতৃত্ব দিতে পারে।
উল্লেখ্য, গত এপ্রিল মাসে ইউজিসিতে অনুষ্ঠিত এক সভায় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, একক ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বকীয়তা, স্বাতন্ত্র, স্বায়ত্তশাসন ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। ভর্তি পরীক্ষা অন্তর্ভূক্তিমুলক করা হবে এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়বস্তু এর অন্তর্ভুক্ত থাকবে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের স্বার্থে একক ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী।