অপেক্ষাকৃত অল্প বয়সী ছেলেমেয়েরা করোনায় উচ্চহারে সংক্রমিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, অল্প বয়সী ছেলেমেয়েরা করোনার সাইলেন্ট ক্যারিয়ার হিসেবে পরিবারের বয়স্কদের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়ে দিচ্ছে। ফলে বয়স্করা আক্রান্ত হচ্ছেন এবং অধিকাংশই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছেন।’ মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) রাজধানীর মহাখালীর বিসিপিএস মিলনায়তনে ‘কোভিড-১৯ মহাদুর্যোগে বিশ্ব : দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় জনসচেতনার গুরুত্ব ও সমসাময়িক বিষয়া নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদফতরের গবেষণায় দেখা গেছে, করোনায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে তরুণ-তরুণীরা। তারা মুখে মাস্ক না পরাসহ প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি না মেনে বাইরে ঘোরাফেরা করে। নানা স্থানে যায় ও নানাজনের সঙ্গে আড্ডা মারে। তাদের মধ্যে অনেকেই করোনায় আক্রান্ত হয়ে জীবাণু বহন করে। তাদের অনেকের আবার করোনার কোনো লক্ষণই প্রকাশ পায় না। তারা যখন ঘরে ফেরে, তখন তাদের মাধ্যমে পরিবারের বয়স্ক ব্যক্তিরা অজান্তেই করোনায় আক্রান্ত হন।’
তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদফতরের মৃত্যুর পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, আক্রান্তদের মধ্যে তরুণদের সংখ্যা বেশি হলেও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে বয়স্ক লোকজনের সংখ্যা বেশি। তাদের অনেকেই কিন্তু ঘরের বাইরে না গিয়েও আক্রান্ত হয়েছেন এবং কেউ কেউ মারা গেছেন।’ তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদফতরের মৃত্যুর পরিসংখ্যানে দেখা গেছে ঘর থেকে বের না হয়েও মোট করোনায় মৃতের ৯২ শতাংশ চল্লিশোর্ধ্ব ব্যক্তি মারা যাচ্ছেন। তার মধ্যে সর্বোচ্চ ৫৭ শতাংশের বয়স ৬০ বছরের বেশি।’
ঘরের বাইরে বের হলে প্রয়োজনীয় সব প্রকার স্বাস্থ্যবিধি মেনে বের হওয়ার জন্য তরুণদের প্রতি আহ্বান জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। অন্যথায় তাদের কারণে পরিবারের বয়স্করা করোনায় আক্রান্ত তথা মৃত্যুঝুঁকিতে পড়বে বলে সতর্ক করেন তিনি।
এদিকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মঙ্গলবারের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দেখা গেছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে আরও ৭৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১১ হাজার ২২৮ জন। তাদের মধ্যে ছয় হাজার ৩৮৬ জনের (৫৬ দশমিক ৮৮ শতাংশ) বয়স ৬০ বছরের বেশি। এ ছাড়া দুই হাজার ৭২৭ জনের (২৪ দশমিক ২৯ শতাংশ) বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছর এবং এক হাজার ২৪৪ জনের বয়স (১১ দশমিক ০৮ শতাংশ) ৪১ থেকে ৫০ বছর।