ভারতের সিকিম থেকে ভেসে আসা ৬ ভারতীয় নাগরিককের মরদেহ দুই দিনে তাদের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করেছে লালমনিরহাট পুলিশ।
শনিবার (৭ অক্টোবর) একটি মরদেহ লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ ও বিজিবি। এর আগে শুক্রবার (৬ অক্টোবর) হাতীবান্ধা উপজেলার সিন্দুর্ণা এলাকায় তিস্তা নদীর চর থেকে আনুমানিক ৩৫ বছর বয়সি একজন পুরুষের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ ও বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ থানা পুলিশ তিস্তা নদীর চর থেকে গত ৫ অক্টোবর আনুমানিক ৪৮ বছর বয়সি এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করে। একইদিন রংপুরের গঙাচড়া থানা পুলিশ আনুমানিক ৪২ বছর বয়সি এক পুরুষ, লালমনিরহাট সদর থানা পুলিশ অজ্ঞাত পরিচয় আনুমানিক ৩৮ ও ৪১ বছর বয়সি দুজন পুরুষ, নীলফামারীর ডিমলা থানা পুলিশ ৪০ বছর বয়সি এক পুরুষের মরদেহ তিস্তা নদীর চর থেকে উদ্ধার করে। পরে এসব মরদেহ ভারতীয় পুলিশের কাছে বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে হস্তান্তর করেছে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ। তিস্তা নদীতে উদ্ধার হওয়া ভারতীয় সেনা সদস্যের মরদেহ শুক্রবার বিজিবি-বিএসএফের উপস্থিতিতে ডিমলা সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
লালমনিরহাট পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, গাইবান্ধা ও রংপুরে উদ্ধার হওয়া দুই ভারতীয় নাগরিকের মরদেহ পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রামের তিনবিঘা সীমান্ত পথে বিজিবি-বিএসএফের উপস্থিতিতে মেখলিগঞ্জ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। লালমনিরহাটে উদ্ধার হওয়া ভারতীয় তিন নাগরিকের মরদেহ বিজিবি-বিএসএফের উপস্থিতিতে দিনহাটা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। অপর একটি মরদেহ পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী স্থলবন্দর সীমান্ত দিয়ে বিজিবি-বিএসএফের উপস্থিতিতে মেখলিগঞ্জ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
রংপুর বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল ইয়াছির জাহান হোসেন বলেন, ‘তিস্তা বিপর্যয়ের কারণে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ২৩ সদস্যের একটি কনভয় ভেসে যায়। একই সঙ্গে কিছু গোলাবারুদও ভেসে যায়। আমরা ছয়টি মরদেহ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি। এরমধ্যে নারীর মরদেহটি ছাড়া প্রাথমিকভাবে পাঁচটি মরদেহই সেনাবাহিনীর জোয়ান বলে ভারতীয় সেনাবাহিনী নিশ্চিত করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বুড়িমারী স্থলবন্দর সীমান্তের ওপারে চ্যাংড়াবান্ধায় ভারতীয় সেনাবাহিনী একটি অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করেছে। হস্তান্তর হওয়া মরদেহগুলোর শারীরিক গঠন ও বয়স দেখে তারা তাদের সদস্য বলে দাবি করেছে। তারা তাদের ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে আমাদেরকে জানাবে।’
কর্নেল ইয়াছির জাহান হোসেন বলেন, ‘আমরা স্থানীয় প্রশাসন ও জনসাধারণকে সতর্ক থাকতে বলেছি। কেননা ভারতীয় সেনাবাহিনীর কিছু অস্ত্র গোলাবারুদ তিস্তায় বানের পানিতে ভেসে এসেছে। এগুলো কেউ যেন হাত না দেয়। দেখা মাত্র স্থানীয় পুলিশ বা বিজিবিকে খবর দেওয়া হয়। কেউ হাত দিলে বিস্ফোরিত হয়ে ক্ষতি হতে পারে। বিষয়টি গণমাধ্যমসহ সবাইকে সজাগ থাকার অনুরোধ করা হয়েছে।