বিবাহিত ও অন্তঃসত্ত্বা ছাত্রীদের হল ছাড়তে কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা প্রত্যাহার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, প্রক্টর ও হল প্রভোস্ট বরাবর আইনি নোটিশ পাঠানোর পর এমন কথা জানায় হল প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, হল ছাড়ার নোটিশে ছাত্রীরা তাদের কাছে যেতে পারতেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, ট্রেজারার কিংবা প্রক্টর আছেন; তারা তাদের কাছে যেতে পারতেন। কিন্তু তারা (ছাত্রী) সেটা না করে সরাসরি আদালতে চলে গেছেন। এখন আদালত যে সিদ্ধান্ত দেবেন সেটাই কার্যকর হবে।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) একমাত্র আবাসিক হলে থাকা বিবাহিত ও অন্তঃসত্ত্বা ছাত্রীদের হল ছাড়তে নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ।
জবির বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রাধ্যক্ষ দীপিকা রাণী সরকারের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বিবাহিত ও অন্তঃসত্ত্বা ছাত্রীদের হল ছাড়তে বলা হয়।
সেখানে বলা হয়, ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে আবাসিকতা লাভ ও বসবাসের শর্তাবলী এবং আচরণ ও শৃঙ্খলাসংক্রান্ত বিধিমালা-২০২১ এর ১৭নং ধারা মোতাবেক বিবাহিত ও গর্ভবতী ছাত্রীরা আবাসিক সিট পাবেন না। বিধায় তারা অতিদ্রুত হলের সিট ছেড়ে দেবে। অন্যথায়, তাদের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রী হলের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, হলের আবাসিকতা লাভ ও বসবাসের শর্তাবলী এবং আচরণ ও শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালা ২০২১ এর ১৭ নম্বর ধারা অনুযায়ী বিবাহিত ও গর্ভবতী ছাত্রীরা হলে সিট পাবে না। তারা অতিদ্রুত হলের সিট ছেড়ে দেবে। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, যেসব মেয়ে শিক্ষার্থীর মাস্টার্সের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে তারা অতিদ্রুত হল ত্যাগ করবে। পাশাপাশি কোনো মানোন্নয়ন (মাস্টার্স) পরীক্ষার্থী ও এম.ফিল ছাত্রী হলে থাকতে পারবে না বলেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
কর্তৃপক্ষের নির্দেশনার দুই দিন পর ২৭ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. সোলায়মান তুষার ছাত্রীদের পক্ষে ডাক ও ই-মেইলযোগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে একটি আইনি নোটিশ পাঠান।
সোলায়মান তুষার আরও বলেন, এই বিধানের ফলে কার্যত বিবাহিত ও গর্ভবতী ছাত্রীরা হলের আবাসিক সুবিধা গ্রহণ করে উচ্চশিক্ষা অর্জনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে। বিষয়টি নিয়ে বর্তমানে ছাত্রীদের মধ্যে মারাত্মক অসন্তোষ এবং ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। দেশের একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন বৈষম্যমূলক বিধান থাকার বিষয়টি প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমে গুরুত্বের সঙ্গে সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. দীপিকা রাণী বলেন, ‘ছাত্রীরা যেহেতু আমাদের কাছে না এসে আইনের কাছে গেছে; সুতরাং এখন আদালত যে সিদ্ধান্ত দেবে আমরা তাই মেনে নেব।’