যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল থেকে ভারত প্রত্যাগত ৭ জন এবং স্থানীয় তিনজনসহ ১০ জন করোনা রোগী পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা নিয়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একে অপরের ঘাড়ে দায় চাপানোর চেষ্টা করছে। তবে জেলা প্রশাসক বলছেন, দায় যারই হোক না কেন, ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে, সে ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতকর্তামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
সন্ধ্যা ৬টায় যশোরের পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার জানান, পালিয়ে যাওয়া ১০ জনকেই শনাক্ত করে তাদের স্ব স্ব জেলার হাসপাতালে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। এর আগে পালিয়ে যাওয়া রোগীদের নাম ঠিকানা চিহ্নিত করে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও সিভিল সার্জনকে অবহিত করা হয়। তারা তাদের আইসোলেশনের ব্যবস্থা করেন।
ভারত প্রত্যাগত রোগীরা হলেন : সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপপাড়া গ্রামের জালাল হোসেনের ছেলে মিলন হোসেন (৩২), একই জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার মনতোষ সর্দারের স্ত্রী শেফালী রানী (৪০), যশোর শহরের পশ্চিম বারান্দীপাড়ার বিশ্বনাথ দত্তের স্ত্রী মনিমালা দত্ত (৪৯), রাজবাড়ী সদর উপজেলার রামকান্তপুরের গোলাম রব্বানীর মেয়ে নাসিমা আক্তার (৫০), খুলনার পাইকগাছা উপজেলার ডামরাইল গ্রামের আহমদ সানার ছেলে মো. আমরুল সানা (৫২), খুলনার রূপসার শের আলীর ছেলে সোহেল সরদার (১৭) এবং একই জেলার সদরের কলিম কৃষ্ণের ছেলে বিবেকানন্দ (৫২)। এদের মধ্যে প্রথম ৫ জনই ২৩ এপ্রিল, পরেরজন ২৪ এপ্রিল এবং শেষেরজন ১৮ এপ্রিল পালিয়ে যান। এতো দেরিতে জানার বিষয়ে হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়ক কোনো সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি।
স্থানীয়ভাবে করোনা পজিটিভ শনাক্ত পালিয়ে যাওয়া তিনজন হলেন : যশোর সদরের পাঁচবাড়িয়ি গ্রামের রবিউল ইসলামের স্ত্রী ফাতেমা (১৯), একই গ্রামের একরামুল কবীরের স্ত্রী রুমা (৩০) এবং ওয়াপদা গ্যারেজের ভদ্র বিশ্বাসের ছেলে প্রদীপ বিশ্বাস (৩৭)।
করোনা ওয়ার্ডে দায়িত্বরত একজন সিনিয়র নার্স বলেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আসা ১০ জন ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন। কিন্তু রবিবার সকালের পর থেকে তাদের আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। যশোর জেনারেল হাসপাতালের একাধিক ডাক্তার বলেন, করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট উদ্বেগ তৈরি করেছে। ফলে পালিয়ে যাওয়া রোগীরা যদি ভারতীয় ভেরিয়েন্টের বাহক হন তাহলে তা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। যশোর জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মো. তমিজুল ইসলাম খান ইত্তেফাককে বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনা আর না ঘটে সেটি নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।