চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় গ্রাম্য চিকিৎসক তৌহিদুল ইসলাম (৪২) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে একজন আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
রোববার (১ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ্ আল-মামুন।
গ্রেফতাররা হলেন— চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গা উপজেলার মাধবপুর গ্রামের মৃত খেলাফত মণ্ডলের ছেলে সানোয়ার হোসেন (৫০) ও সানোয়ার হোসেনের ছেলে জীবন হোসেন (২২)।
তৌহিদুল ইসলাম (৪২) আলমডাঙ্গা ডম্বলপুর গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে। তিনি পেশায় ছিলেন গ্রাম্য চিকিৎসক।
এর আগে শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টায় আলমডাঙ্গা উপজেলার কালিদাসপুর ইউনিয়নের ডম্বলপুর-মাধবপুরে সংযোগ ব্রিজের পিলারের সাথে সাদা গেঞ্জি দিয়ে মুখ বাঁধা, গলায় লাল রঙের গামছা পেঁচানো, গলায় রশি দিয়ে বাঁধা অবস্থায় কুমার নদীতে অর্ধডুবন্ত অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ্ আল-মামুন জানান, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় রোববার (১ অক্টোবর) আলমডাঙ্গা থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু হয়। মামলা রুজুর ৩ ঘণ্টার মধ্যেই আলমডাঙ্গা থানার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যার দায় স্বীকার করেন। তারা জানান, নিহত তৌহিদুল ইসলামের মেয়ে তামান্না খাতুনের সঙ্গে গত দুই মাস আগে পরিবারের অসম্মতিতে পালিয়ে বিয়ে হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে জীবন ও জীবনের বাবার বিরুদ্ধে একটি অপহরণ মামলা করেন তৌহিদুল। এর জের ধরে তৌহিদুল ইসলামের মেয়েকে আসামিরা বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতে থাকেন। তৌহিদুল ইসলামের মেয়ে নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে আসামির বাড়িতে বিষ পান করেন। এই নিয়ে তৌহিদুল ও আসামিদের সঙ্গে ঝগড়া-বিবাদ হয়। আসামি জীবন ও আসামি সানোয়ারকে তৌহিদুল ও তার পরিবার অপমান-অপদস্থ করেন। অপমানের প্রতিশোধ নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে আসামিদ্বয়। এরপর বাবা-ছেলে মিলে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী তৌহিদুলকে কৌশলে মাধবপুর এলাকায় ডেকে নিয়ে পিছন থেকে গলায় গামছা ও মুখের ভিতরে সাদা গেঞ্জি ঢুকায়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা নিশ্চিত করেন। হত্যাকাণ্ডের ঘটনা অন্যদিকে প্রবাহিত করার জন্য তৌহিদুল এর গলায় রশি দিয়ে ব্রিজের রেলিংয়ের সাথে ঝুলিয়ে দেয়।
তিনি আরও জানান, আসামি জীবন হোসেন হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছেন এবং আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।