প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আলোচনা সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।
তিনি বলেন, নিষেধাজ্ঞাকে ভয় করলে বঙ্গবন্ধু এ দেশ স্বাধীন করতে পারতেন না। নিষেধাজ্ঞাকে কেউ ভয় করলে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা, বাংলাদেশের সোনালী অর্জন সেগুলো হতো না। আমাদের নির্বাচন সংবিধান নির্ধারণ করবে। আমরা তত্ত্বাবধায়ক মানি না। তত্ত্বাবধায়ক এখন মরা লাশ, ওই লাশ এখন আমাদের দিয়ে লাভ নেই। বাংলাদেশে ওই তত্ত্বাবধায়কের ইতিহাস জানা আছে।
তিনি বলেন, ১৫ বছর আগের বাংলাদেশ, ১৫ বছর পরে বাংলাদেশ, ১৫ বছর আগের এই ঢাকা শহর, ১৫ বছর পরের এই ঢাকা শহর, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের আলোতে ঝলমল। কী পরিবর্তন তাকিয়ে দেখুন। আগামী মাসে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রো রেল চলবে। কী অপূর্ব সুন্দর ঢাকা শহর। এই রূপান্তরের রূপান্তর কে? সংকটকে সম্ভাবনায় রূপ দিয়েছে কে? আমাদের সাহস, আমাদের স্বপ্নের বর্ণিল ঠিকানা, কে তিনি? শেখ হাসিনা।
৭৫ পরবর্তী সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত ৪৮ বছরে তিনি বাংলাদেশের সেরা নেতা। তার তুলনা কারো সঙ্গে চলে না। তিনি বাংলাদেশকে নবরূপে বিশ্বের বুকে উপস্থাপন করেছেন।
তিনি আরও বলেন, নিষেধাজ্ঞাকে ভয় করলে বাংলাদেশের যে অর্জন তা আমরা রক্ষা করতে পারব না। আমাদের গণতন্ত্র কেমন হবে তা আমাদের সংবিধান ঠিক করে দিয়েছে। আমাদের নির্বাচন আমাদের সংবিধান নির্ধারণ করে দিয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা আমরা মানি না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার মৃত হয়ে গেছে। সেটা আর কোনদিন বাংলাদেশে ফিরে আসবে না। তত্ত্বাবধায়কের নামে বাংলাদেশে একটি অস্বাভাবিক সরকার আর কখনো হবে না। কে কী বলল তাতে কিছু যায় আসে না।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট আজকেই বলেছেন তাদের গণতন্ত্র হুমকির মুখে। তারা ট্রাম্পকে সামলাতে পারে না, আবার বাংলাদেশকে ধমক দেয়। বেপরোয়া ট্রামকে ঠেকাতে আমেরিকা সরকার ব্যর্থ। এমনকি জনমত জরিপেও ট্রাম্প এগিয়ে আছেন। গত জানুয়ারি মাসে আমেরিকার রাজধানী ওয়াশিংটনের রাস্তায় ছয়টি প্রাণ ঝরে গেল। এ কেমন গণতন্ত্র?
তিনি বলেন, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে বাংলাদেশে হয়ে যাওয়া নির্বাচনে কোনো প্রাণ ঝরেনি। সেখানে প্রতিদিন আমেরিকার মতো দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে। এমনকি শিশুরাও প্রাণ দিচ্ছে। তাহলে কেন আমাদের ধমক দেন?
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম যতই ভয় দেখান লাভ নেই। আগামী নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে। ষড়যন্ত্র করে নির্বাচন বানচাল করা যাবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। শেখ হাসিনা ছাড়া কোনো নির্বাচন বাংলাদেশের জনগণ মেনে নেবে না। কারণ শেখ হাসিনা ছাড়া আর কোনো নেতা দেশে নেই যাকে মানুষ বিশ্বাস করে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার কারণেই বাংলাদেশ আলোর মুখ দেখেছে। অন্ধকার থেকে বেরিয়ে উন্নয়নের দিকে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সুতরাং ষড়যন্ত্র করে বাংলাদেশকে পেছনের দিকে নিয়ে যাবেন না। সেটা আমরা হতে দেব না।
সেতুমন্ত্রী বলেন, ষড়যন্ত্র করে নির্বাচন হতে দেবেন না, দেখব কে নির্বাচন ঠেকায়? বিএনপির আন্দোলন মরীচিকার ঘর। সে ঘর ভেঙে যাবে। থাকবেন শুধু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কারণ দেশের মানুষ শেখ হাসিনার সাথেই রয়েছে।
তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে। আমার নির্বাচন আমি করব। তুমি (যুক্তরাষ্ট্র) আমাকে বলার কে? ফখরুল সাহেব জনগণ যখন আপনাদের ধাওয়া দেবে। তখন কোথায় যাবেন? কাছাকাছি কর্ণফুলী আছে। সেখানে ঝাঁপ দেন। আইন মানবেন না বলছেন, কী করবেন? নাশকতা করবেন? নাশকতা করতে আসলে; আমরা নাশকতার কালো হাত ভেঙে দেব।
সংসদ উপনেতা ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কর্নেল (অব.) ফারুক খান, ড. আব্দুর রাজ্জাক, শাহজাহান খান, কামরুল ইসলাম, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, ইঞ্জি. মোশাররফ হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, আইন বিষয়ক সম্পাদক নাজিবুল্লাহ হিরু, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক সিরাজুল মোস্তফা, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি নুরুল আমিন রুহুল প্রমুখ।