অর্থনৈতিক অস্থিরতায় পার করছে বিশ্ব। দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে চাপে রয়েছে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ঝুঁকি কতটুকু সেটি জানিয়েছে লন্ডনভিত্তিক ইকোনমিস্ট গ্রুপের গবেষণা ও বিশ্লেষণ বিভাগ ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট।
ইকোনোমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (ইআইইউ) জানিয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশের আর্থিক ঝুঁকি কম। আর্থিক ঝুঁকি মূল্যায়নে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার চেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ।
সম্প্রতি প্রকাশিত ‘নো রিটার্ন টু চিপ মানি’ শিরোনামের প্রতিবেদনে লন্ডনভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটি জানায়, এশিয়ায় আর্থিক ঝুঁকি কমে এলেও পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা এখনো উচ্চঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তবে সে তুলনায় কম ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ। বৈশ্বিক সুদহারের সাম্প্রতিক ঊর্ধ্বগতি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর চাপ বাড়িয়েছে।
এর ফলে ২০২২ সালে ছয়টি দেশ সার্বভৌম ঋণখেলাপি হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আরো কিছু দেশ ঋণখেলাপি হতে পারে। এর পেছনে অন্যতম কারণ উচ্চ সুদহার। বাংলাদেশ নিয়ে পূর্বাভাসে বলছে, বহির্বিশ্বের অর্থায়নের শর্ত পূরণ করতে গিয়ে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৬০ শতাংশ পর্যন্ত কমতে পারে।
এর পাশাপাশি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রাজস্ব ঘাটতি জিডিপির ৫ শতাংশের বেশি হতে পারে। যদিও অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী দেশের বাজেট ঘাটতি জিডিপির ৫.১ শতাংশের বেশি হবে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জিডিপি অনুপাতে দেশের সরকারি ঋণ কিছুটা পরিমিত হতে পারে, যা হবে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৪০ শতাংশের কম। এ অর্থবছরে জিডিপি অনুপাতে বৈদেশিক মুদ্রায় সরকারি ঋণ হবে ১০ থেকে ৩০ শতাংশ।
সংস্থাটি জানিয়েছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জিডিপি অনুপাতে দেশের সরকারি ঋণ কিছুটা পরিমিত হতে পারে। যা হবে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৪০ শতাংশের কম। এ অর্থবছরে জিডিপি অনুপাতে বৈদেশিক মুদ্রায় সরকারি ঋণ হবে ১০ থেকে ৩০ শতাংশ।
প্রতিবেদনে পণ্য রপ্তানি, প্রাথমিক আয় ও রেমিট্যান্সের শতাংশ হিসাবে মোট বৈদেশিক ঋণ পরিষেবা ১০ শতাংশের কম হবে বলে অনুমান করা হয়েছে। এতে চলতি হিসাবের ভারসাম্যে ঘাটতি ধরা হয়েছে ৬ শতাংশের বেশি।
এর আগে ইআইইউয়ের আরেকটি প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের শীর্ষ ২০টি অর্থনীতির একটি হবে। এই তালিকায় বাংলাদেশের সঙ্গে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ইন্দোনেশিয়াও স্থান পাবে। ফলে চীনের বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশ আকর্ষণীয় গন্তব্য হতে পারে।
তাতে বলা হয়, বাংলাদেশের বাজারের আকার ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ওপর নির্ভর করে এই পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে ইলেকট্রনিক ভোগ্য পণ্য, তথ্য-প্রযুক্তি সেবা, টেলিযোগাযোগ, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও গাড়ির কথা বলা হয়েছে।