গ্রাম ছেড়ে শহরে ছুটছে মানুষ। ইউরোপসহ বিশ্বের উন্নত অনেকে দেশে এমন প্রবণতা দেখা গেলেও ঠিক উল্টো ঘটনা ঘটছে জার্মানিতে। এই দেশে শহর ছেড়ে বরং গ্রামে ফিরতে শুরু করেছেন অনেকে।
জার্মানির কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের তথ্য বলছে, ২০১৭ সালের পর ৩০ বছল থেকে ৪৯ বছর বয়সী, যাদের সন্তান আছে এবং ২৫ বছর থেকে ২৯ বছর বয়সী তরুণ পেশাজীবীদের মধ্যে গ্রামে বসবাসের প্রবণতা বেড়েছে।
বার্লিন ইনস্টিটিউট ফর পপুলেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের গবেষকেরা বলছেন, অতীতের চেয়ে বর্তমানে গ্রামের প্রতি মানুষের আকর্ষণ বাড়ছে। সংস্থার সামাজিক মনোবিজ্ঞানী ফ্রেডেরিক জিক্সটাস বলছেন, ২০২১ সালে দুই-তৃতীয়াংশ গ্রামীণ সমাজে জনসংখ্যা বেড়েছে। এই তথ্য এক দশক আগে প্রতি চারটি গ্রামীণ সমাজের মধ্যে মাত্র একটির জন্য সত্য ছিল।
পরিস্থিতি বুঝতে ভ্যুস্টেনরোট ফাউন্ডেশন ও বার্লিনের ওই ইনস্টিটিউটের গবেষকেরা জনসংখ্যা বাড়ছে এমন ছয়টি গ্রামীণ সমাজ পরিদর্শন করেছেন। সেখানে তারা বিভিন্ন জনের সঙ্গে কথা বলেছেন। একজন নতুন বাসিন্দা তাদের জানান, ‘আমি অনেক ভেবে গ্রামে আসার কথা ভেবেছি কারণ এখানে মানুষের সঙ্গে মানুষের বন্ধন অনেক শক্তিশালী। আর সত্যি বলতে, কিছু নির্মাণ করতে গেলে খরচ একটা বড় বিষয়। অবশ্যই গ্রামে বিষয়টা অনেক অন্যরকম।’
কম খরচে বসবাস, প্রকৃতির সান্নিধ্য আর কম দূষণ – এসব কারণে মানুষ গ্রামে যাচ্ছেন বলে গবেষকেরা জানতে পেরেছেন। সামাজিক মনোবিজ্ঞানী ফ্রেডেরিক জিক্সটাস বলছেন, করোনার পর ঘরে থেকে চাকরি করা সম্ভব হওয়ার কারণেও অনেকে গ্রামে যাচ্ছেন।
জার্মানিতে গ্রামে যাওয়ার প্রবণতা বাড়লেও ইউরোপের অন্যান্য দেশে পরিস্থিতি উল্টো। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সংস্থা ইউরোস্ট্যাটের হিসাব বলছে, ২০১৫ সাল থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ইইউর ৪০৬টি গ্রামীণ এলাকার মধ্যে ৩৫৫টি থেকে মানুষ শহরে পাড়ি জমিয়েছেন।
এসব এলাকায় তরুণ ও কাজের বয়স আছে এমন মানুষের সংখ্যা অনেক কমেছে। সেই তুলনায় ৬৫ বছরের বেশি বয়সী মানুষের সংখ্যা বছরে গড়ে এক দশমিক আট শতাংশ করে বেড়েছে।