উত্তর কোরিয়ার নেতা রাশিয়ার সঙ্গে আগামী ১০০ বছরের জন্য স্থিতিশীল ও গভীর সম্পর্ক গড়ে তোলার অঙ্গীকার করেছেন। রুশ প্রেসিডেন্টও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ইতিহাস ও ঐতিহ্য চালিয়ে যাবার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। দুই নেতা ‘সাম্রাজ্যবাদী শক্তির সামরিক হুমকি, প্ররোচনা ও স্বৈরাচার’-এর মুখে কৌশলগত সহযোগিতা আরও নিবিড় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ইউক্রেনের নাম না করলেও কিম বলেন, তিনি নিশ্চিত যে রাশিয়া তার শত্রুদের বিরুদ্ধে বড় জয় পাবে। কিম পুতিনকে আশ্বাস দিয়ে বলেন, তার দেশ চিরকাল রাশিয়ার পাশে থাকবে।
কিম পুতিনের সঙ্গে রাশিয়ার এক মহাকাশযান উৎক্ষেপণ কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন। বাহ্যিক আড়ম্বর ও উষ্ণ ব্যক্তিগত সম্পর্কের বাইরে দুই দেশের মধ্যে ঠিক কোন কোন বিষয়ে সহযোগিতা বাড়ছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। অস্ত্র সরবরাহ, অস্ত্র বাণিজ্য বা প্রযুক্তিগত সহায়তা সম্পর্কে প্রকাশ্যে কিছু জানানো হয়নি।
ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে রাশিয়ার অস্ত্র ও গোলাবারুদের বাড়তি চাহিদা মেটাতে পিয়ংইয়ং কতটা সহায়তা করতে রাজি হয়েছে, সে বিষয়ে ধোঁয়াশা থেকে যাচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া সে বিষয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। মস্কো ও পিয়ংইয়ং এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে। নতুন অস্ত্র সহযোগিতার ক্ষেত্রে মার্কিন প্রশাসন দুই দেশের ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা চাপানোর হুমকি দিয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউস মিলার বলেছেন, রাশিয়া এমন সব কর্মসূচির ক্ষেত্রে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সহযোগিতার কথা বলছে, যেগুলো জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব লঙ্ঘন করতে পারে। এমন সম্ভাবনাকে তিনি ‘উদ্বেগজনক’ হিসেবে বর্ণনা করেন। জাপানও এমন আশঙ্কা জানিয়ে সতর্ক করে দিয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার এক মন্ত্রী বলেন, রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে সম্ভবত গোপনে কোনো সামরিক বোঝাপড়া চলছে। বুধবার রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনও পরোক্ষভাবে এমন আভাস দিয়েছেন। কিম জং উনের সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার প্রায় গোটা সামরিক নেতৃত্ব রাশিয়ায় যাওয়ায় জল্পনা-কল্পনা বাড়ছে।
রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে আরও নিবিড় সামরিক সহযোগিতা এশিয়া মহাদেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে বলে আশঙ্কা বাড়ছে। চীনও সেই জোটে থাকায় স্থিতিশীলতা বিপন্ন হতে পারে। সংবাদ সংস্থা এএফপি-কে এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক সংসদ সদস্য কিম জং দে। পুতিন উত্তর কোরিয়ার স্যাটেলাইট তৈরির ক্ষেত্রে সহায়তার অঙ্গীকার করায় সে দেশের সামরিক ক্ষমতা আরও বাড়তে পারে। উল্লেখ্য, উত্তর কোরিয়া ইতোমধ্যে দু-দুটি গোয়েন্দা স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করতে ব্যর্থ হয়েছে।