আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি নেতারা ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর ঐতিহাসিক বাংলাদেশ সফর, ব্রিকস সম্মেলন এবং জি-২০ সম্মেলনে বাংলাদেশের অসাধারণ কূটনৈতিক সফলতা নিয়ে নির্লজ্জ মিথ্যাচার ও অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে।
বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার সই করা এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন। বিবৃতিতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নির্লজ্জ মিথ্যাচার এবং বিভ্রান্তিকর বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি।
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মিলিয়ন-বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের মাধ্যমে লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করে দেশের বিরুদ্ধে লাগাতার কুৎসা ও মিথ্যাচারের মধ্য দিয়ে বিএনপি বাংলাদেশকে সমগ্র বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন করার এক গভীর ষড়যন্ত্র চালিয়ে আসছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কুশলতার কারণে বিএনপির সে চক্রান্ত ব্যর্থতা হওয়ায় এখন তাদের গাত্রদাহ হচ্ছে। সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত ব্রিকস সম্মেলন এবং ভারতে অনুষ্ঠিত জি-২০ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের জন্য অনন্য গৌরব ও মর্যাদা বয়ে এনেছেন। এ সম্মেলনগুলোতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরব উপস্থিতি বিশ্বনেতৃবৃন্দের বিশেষ মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। যার মধ্য দিয়ে বিশ্বসভায় সফল রাষ্ট্রনায়ক বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার মর্যাদাপূর্ণ অবস্থান এবং সুদক্ষ নেতৃত্বের স্বীকৃতি প্রতীয়মান হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁসহ শক্তিধর দেশের রাষ্ট্রনায়করা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সুদৃঢ় নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশে গণতন্ত্রের বিকাশ এবং অসাধারণ অগ্রগতি ও সাফল্য অর্জিত হচ্ছে। বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে বিশ্বনেতৃবৃন্দ যখন বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও সুপ্রসারিত করছে, ঠিক তখন বিএনপি-জামায়াত অপশক্তি দেশবিরোধী গভীর
ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে নানামুখী অপপ্রচার চালাচ্ছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যে তারই প্রতিফলন ঘটেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্র পরিচালনায় সততা, নিষ্ঠা, দক্ষতা ও কর্মপরিকল্পনায় বাংলাদেশকে এক অনন্য
উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছেন। একের পর এক বাংলাদেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্নের মেগা প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েসহ সফলভাবে বাস্তবায়িত সব মেগাপ্রকল্পের সুবিধা ভোগ করছে জনগণ। জনগণের স্বপ্নের এসব প্রকল্পেও বিএনপির গাত্রদাহ! একটি রাজনৈতিক দল কতটা দেউলিয়া হলে, কতটা নীতি বিবর্জিত হলে, কতটা হীন মানসিকতায় আচ্ছন্ন হলে জনগণের ভাগ্য বদলের এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হওয়ায় অন্তর্জালায় ভুগতে পারে?’
‘একদিকে বিএনপি তাদের চরম ব্যর্থতার অভিঘাতে পর্যুদস্ত। অন্যদিকে শেখ হাসিনার উন্নয়ন অভিযাত্রা ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তার নেতৃত্বের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্রমেই হতাশার সাগরে নিমজ্জিত হচ্ছে বিএনপি। সেজন্য তারা জাতিকে বিভ্রান্ত করতে উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে মিথ্যা, বানোয়াট ও বিকৃত তথ্য উপস্থাপন করছে। দেশবাসী ভুলে যায়নি, বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ওয়াশিংটন টাইমসে দেশবিরোধী কলাম লিখে পদ্মাসেতু প্রকল্পের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করেছিল। বিএনপি দীর্ঘদিন রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল অথচ তখন তারা উল্লেখযোগ্য কোনো উন্নয়ন করতে পারেনি। বরং দুর্নীতি ও লুটপাটতন্ত্র কায়েম করেছিল।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপির সময় ২০০৫-০৬ অর্থবছরে বাজেটের আকার ছিল মাত্র ৬১ হাজার ৫ কোটি টাকা। আর সেখানে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাজাটের পরিমাণ ৭ লাখ ৬৯ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। তাদের সময় যেসব প্রকল্প কল্পনারও বাইরে ছিল শেখ হাসিনা সেসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করে দেখিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুকন্যার সততা, নিষ্ঠা ও সুশাসনের কারণেই এ সাফল্য অর্জিত হয়েছে।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী প্রজন্মের জন্য একটি সুখী-সমৃদ্ধশালী কল্যাণকর ও শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ বিনির্মাণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। বাংলাদেশের আপামর জনগণ উন্নয়ন-অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির অভিযাত্রায় আজ ঐক্যবদ্ধ। বিএনপি-জামায়াত অপশক্তির কোনো ষড়যন্ত্রই বাঙালি জাতির এ স্বপ্নযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না।’