বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আশঙ্কা ব্যক্ত করে বলেছেন, হাজারো নেতাকর্মী প্রতিদিন আদালতের বারান্দায় ঘুরছে। এক দেড় মাসের মধ্যে হয়তো আমাকেও জেলে যেতে হতে পারে। কারণ যারা সরকারকে বলছে, তুমি চলে যাও, ছেড়ে দাও ক্ষমতা। সরকার তাদের সাজা দেওয়ার ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।
ডাকসুর সাবেক ভিপি আমান উল্লাহ আমান রচিত ‘নব্বইর গণঅভ্যুত্থান ও কিছু কথা’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন উপলক্ষ্যে আলোচনা সভার আয়োজন করে ৯০’র সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের নেতারা।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, প্রতিদিন বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী কোর্টের বারান্দায় ঘুরতে হয়, এটি কোনো গণতান্ত্রিক দেশে হতে পারে না।
দেশের বুদ্ধিজীবী ও সম্পাদকদের কোর্টের বারান্দায় গিয়ে দেখার আহ্বান করে মির্জা ফখরুল বলেন, গিয়ে দেখুন, কীভাবে নেতাকর্মীরা হাজিরা দেয়, কত সাধারণ মানুষ ও নেতাকর্মীরা যাচ্ছে। বলেন তো গণতন্ত্র আছে! এমন বিচার ব্যবস্থা, যদি হাইকোর্টে জামিন দেয়, সেটা আবার নিম্ন আদালতে আটকে দেয়।
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, আইন মন্ত্রণালয় একটি সেল তৈরি করেছে, সেটার কাজ হচ্ছে অতিদ্রুত রায় দিয়ে সাজা দেওয়া। যারা দেশের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করছে তাদের সবাইকে এক কাতারে শামিল হয়ে আদালতে যেতে হচ্ছে।
দেশ একটি যুগসন্ধিক্ষণে উপনীত হয়েছে উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, এই জাতি টিকবে কি টিকবে না এটাই এখন সবচেয়ে বেশি প্রাসঙ্গিক।
তিনি বলেন, ড. ইউনুসকে জেলে ঢুকিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে সরকার। প্রতিহিংসার কারণে তাকে মামলা দেওয়া হয়েছে। ড. ইউনুস নয়, দেশের জনগণের ওপর ভর করেছে বিএনপি।
মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচন আমরা চাই, বিশ্বাস করি নির্বাচন ছাড়া পরিবর্তনের কোনো উপায় নেই। এটা বিশ্বাস করে যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। নির্বাচনটা যদি দলীয় সরকারের অধীনে হয়, পূর্ব অভিজ্ঞতা দেখেছি, কোনো দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হয় না। যদি সেটা আবার আওয়ামী লীগের অধীনে হয়। তা কখনোই সুষ্ঠু হবে না।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, আজ দুর্ভাগ্য আমাদের, ৭১ ও ৯০ সালে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠাতার জন্য জীবন দিতে হয়েছে। কিন্তু স্বাধীনতার ৫২ বছর পর আজ সেই গণতন্ত্রের কথাই বলতে হচ্ছে। দেখতে হচ্ছে দেশ থেকে গণতন্ত্র সম্পূর্ণভাবে বিলীন করে দেওয়া হয়েছে।
আলোচনা সভার সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাবেক উপ-উপাচার্য আ ফ ম ইউসুফ হায়দার।