চিকিৎসা শেষে সিঙ্গাপুর থেকে সস্ত্রীক দেশে ফিরেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এই সফরকালে তাকে ঘিরে যেসব গুজব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে সেটাকে নোংরামি হিসেবে আখ্যায়িত করেন বিএনপি মহাসচিব। এছাড়া বিরোধী দলের নেতাদের বিদেশে যাওয়া-আসার সময় ইমিগ্রেশনে হয়রানি করা হয় বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে বিএনপি মহাসচিব হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান।
পরে সেখানে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব। এসময় বিএনপির একাধিক শীর্ষ নেতার বিদেশে অবস্থানকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া নানা ধরনের গুঞ্জন নিয়ে প্রশ্নের মুখোমুখি হন তিনি।
এসব গুঞ্জন উড়িয়ে দিয়ে ফখরুল বলেন, ‘সামাজিক মাধ্যমে আমাকে নিয়ে যা করা হয়েছে তা নোংরা জিনিস। এগুলো রুচির বাইরে। সরকার এমন একটা জগৎ তৈরি করেছে যেখানে নোংরামি ছাড়া কিছু নেই। দুঃখজনক ব্যাপার হলো, আমাদের মতো রাজনীতিবিদদের জড়িয়েও এসব নোংরা কথাবার্তা ছড়ানো হচ্ছে। এগুলোর উত্তর দেওয়াও লজ্জাজনক।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বিরোধী দলের নেতাদের বিদেশে যাওয়া ও আসার সময় ইমিগ্রেশন হয়রানি করে। এখন এসব আমাদের জীবনের অংশ হয়ে গেছে।’
গত ২৪ আগস্ট চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর যান বিএনপি মহাসচিব ও তার স্ত্রী রাহাত আরা বেগম। দুজনেই নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। চিকিৎসকদের ফলোআপ চিকিৎসায় সিঙ্গাপুর যান। কয়েক বছর আগে মির্জা ফখরুল ইসলামের ঘাড়ে ইন্টারনাল ক্যারোটিড আর্টারিতে ব্লক ধরা পড়ে। এছাড়া তার গলার ধমনিতে রক্ত চলাচলেও জটিলতা সৃষ্টি হয়েছিল।
সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে তার চিকিৎসা হয়। তাকে চিকিৎসার ফলোআপের জন্য প্রতিবছর সিঙ্গাপুরে যেতে হয়। তার স্ত্রী রাহাত আরা বেগমের সম্প্রতি একটি অস্ত্রোপচার হয়। তিনিও সিঙ্গাপুরের র্যাফেলস হসপিটালে চিকিৎসা নেন।
প্রসঙ্গত, বিএনপি মহাসচিবসহ দলের কয়েকজন নেতা একই সময়ে সিঙ্গাপুরে সফর করায় এই সফর নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে পড়ে- নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি নেতারা ষড়যন্ত্র করতে সিঙ্গাপুরে গেছেন। সরকারি দলের কেউ কেউ সরাসরি এই অভিযোগ তোলেন।
ফখরুল সিঙ্গাপুরে থাকাকালেই ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে তিনি প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে ৫০ লাখ টাকা অনুদান নিয়েছেন চিকিৎসার খরচ বাবদ। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নামে একটি চেকও ছড়িয়ে পড়ে। পরে অবশ্য ফখরুল এক বিবৃতিতে সেটাকে মিথ্যা, গুজব ও নোংরামি হিসেবে আখ্যায়িত করেন। এছাড়া ফ্যাক্ট চেকেও চেকটি ভুয়া বলে প্রমাণিত হয়। ফখরুল সিঙ্গাপুর থেকে আর ফিরবেন না এমন গুজবও ছড়ানো হয়।