আজ রবিবার (২৫ এপ্রিল) চট্টগ্রাম বন্দরের ১৩৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রাণপ্রবাহ এবং নৌ বাণিজ্যের প্রাচীনতম কেন্দ্র চট্টগ্রাম বন্দরের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বন্দর কর্তৃপক্ষ, বন্দর ব্যবহারকারী সব মহলকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। এ উপলক্ষ্যে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম. শাহজাহান বন্দর ব্যবহারকারী, কর্মকর্তা-কর্মচারী-শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে এই বন্দরের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে বহুমুখী অবদান রাখার জন্য তার পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান। বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষের এই গৌরবময় সময়ে করোনা পরিস্থিতির কারণে এই বছর চট্টগ্রাম বন্দরের ১৩৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনাড়ম্বরভাবে কোনো আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া পালন করা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম বন্দর বাংলাদেশের আমদানি ও রপ্তানির ৯২ শতাংশেরও অধিক পণ্য এবং ৯৮ শতাংশ কনটেইনারজাত পণ্য হ্যান্ডলিং করে থাকে। ২০২০ সালে বিশ্বব্যাপী কোভিড পরিস্থিতিতেও এই বন্দর ২৮ লক্ষাধিক কন্টেইনার হ্যান্ডেল করেছে। ২০০৯ সালে প্রথম বারের মতো চট্টগ্রাম বন্দর ১০০টি কন্টেইনার পোর্টের তালিকায় ৯৮তম অবস্থান নিয়ে নিজের স্বীকৃতি অর্জন করে। মাত্র ১১ বছরে ৪০ ধাপ এগিয়ে ২০২০ সালে চট্টগ্রাম বন্দর ৫৮তম অবস্থানে উন্নীত হয়। চট্টগ্রাম বন্দরের এই অর্জন বর্তমান সরকারের চলমান অর্থনৈতিক উন্নয়নেরই প্রতিফলন বলে মনে করা হচ্ছে। একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বন্দরের আধুনিকায়ন, যন্ত্রপাতি সংযোজন এবং সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বে-টার্মিনাল, পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল, মাতারবাড়ী বন্দর নির্মাণ ও নিউমুরিং ওভার ফ্লো ইয়ার্ড নির্মাণসহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প চলমান আছে। এরই মধ্যে পতেঙ্গাস্থ লালদিয়াচর এলাকায় বন্দরের গুরুত্বপূর্ণ ৫২ একর ভূমি উদ্ধার করা হয়েছে। উক্ত এলাকায় বন্দর সুবিধাদি বৃদ্ধির বিভিন্ন পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হচ্ছে।
২০২০ সালের মার্চ মাসে চট্টগ্রাম বন্দরে আগত জাহাজের সংখ্যা ছিল ৩৬৬টি, কন্টেইনার হ্যান্ডলিং ২,৪৯,৬৬৯ টিইইউস, কার্গো হ্যান্ডলিং ১০২৬৪৪০২ মে.টন। ২০২১ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত তা যথাক্রমে জাহাজের সংখ্যা ছিল ৩৭৬টি, কন্টেইনার হ্যান্ডলিং ২,৬৯,৪৪৬ টিইইউস, কার্গো হ্যান্ডলিং ১১০৪২৮১৮ মে. টন। কন্টেইনার ও কার্গো হ্যান্ডিলিং এ প্রবৃদ্ধি প্রায় ৭.৭% এবং জাহাজ হ্যান্ডলিং এ ২.৭%। কোভিড-১৯-এর কারণে উন্নত বিশ্বের অনেক বন্দরেরই কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ হলেও চট্টগ্রাম বন্দর সপ্তাহের প্রতিদিন ২৪ ঘণ্টা চালু ছিল। চট্টগ্রাম বন্দর কোভিড-এর ১ম ঢেউয়ের সময়কালে প্রায় ডেলিভারি শূন্য অবস্থা হতে অত্যন্ত অল্প সময়ে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছিল। বিগত বছরের অভিজ্ঞতা কোভিড-১৯-এর দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলা এবং বন্দরের অপারেশন স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করছে।