আফ্রিকার দেশ গ্যাবনে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেছে দেশটির সেনা কর্মকর্তারা। বুধবারের এই অভ্যুত্থানের পর তারা অন্তর্বর্তীকালীন নেতা হিসাবে জেনারেল ব্রাইস ওলিগুই এনগুয়েমারের নাম ঘোষণা করেছে।
এর আগে রাজধানী লিব্রেভিলের রাস্তায় জেনারেল এনগুয়েমারকে তার সৈন্যরা কাঁধে তুলে বিজয় মিছিল করে। ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট আলী বঙ্গো তার বাড়ি থেকে একটি ভিডিও বার্তা দিয়েছেন এবং ‘সারা বিশ্বের বন্ধুদের’ তার পক্ষে ‘সরব হওয়ার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
সাবেক ফরাসি উপনিবেশ এই দেশটি আফ্রিকার অন্যতম প্রধান তেল উৎপাদনকারী দেশ। আর প্রেসিডেন্ট বঙ্গোর ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার মাধ্যমে তার পরিবারের ৫৫ বছরের ক্ষমতার অবসান হয়েছে।
এর আগে বুধবার ভোররাতে গ্যাবনের সেনা কর্মকর্তারা টিভিতে উপস্থিত হয়ে ক্ষমতা গ্রহণের ঘোষণা দেন। তারা গত শনিবারের নির্বাচনের ফলাফল বাতিলেরও ঘোষণা দেন। মূলত ওই নির্বাচনেই বঙ্গোকে আবারও জয়ী ঘোষণা করা হয়েছিল। অবশ্য বিরোধীরা বলছে, নির্বাচনে জালিয়াতি হয়েছে।
কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বঙ্গোর এক ছেলেকে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে, জেনারেলরা আলোচনার জন্য একত্রিত হন। সেখানে পরিবর্তিত সময়ে নেতৃত্ব কে দেবেন, সে বিষয়ে তারা সিদ্ধান্ত নেন।
পরে প্রেসিডেন্সিয়াল গার্ডের সাবেক প্রধান জেনারেল এনগুয়েমার নাম প্রস্তাব করা হলে তাকে নিয়োগের ব্যাপারে সেনারা সর্বসম্মত ভোটে সম্মত হন। সেনাবাহিনীর এই ঘোষণার পর লিব্রেভিল এবং অন্যান্য জায়গায় সাধারণ মানুষ উদযাপন করতে থাকে।
অবশ্য জাতিসংঘ, আফ্রিকান ইউনিয়ন এবং ফ্রান্স এই অভ্যুত্থানের তীব্র নিন্দা করেছে। তাদের সাথে বঙ্গোর পরিবারের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল।
মূলত বঙ্গো পরিবারের প্রতি গ্যাবনের বাসিন্দাদের মধ্যে দীর্ঘকাল ধরে তীব্র অসন্তোষ জন্ম নিয়েছিল। টানা ৫৫ বছর ধরে এই পরিবারটি দেশটিকে শাসন করেছে এবং জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধিসহ আরও নানা বিষয় নিয়ে দেশটিকে ঘিরে জনগণের অসন্তোষ রয়েছে।
উল্লেখ্য, মধ্য আফ্রিকার পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত গ্যাবন তেল এবং খনিজ সমৃদ্ধ একটি দেশ। এই দেশটির জনসংখ্যা মাত্র ২৪ লাখ। ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট আলী বঙ্গোকে গত শনিবারের বিতর্কিত নির্বাচনে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
২০০৯ সাল থেকে তিনি দেশটির প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বপালন করছিলেন। এর আগে, তার বাবা টানা ৪১ বছর ক্ষমতায় ছিলেন।