বাংলাদেশের বন্ধুদের বিভ্রান্ত করতে ভুল তথ্য প্রচার করা হচ্ছে দাবি করে বিষয়টি নিয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
রোববার (২০ আগস্ট) মন্ত্রণালয়ের এক প্রেসনোটে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রেসনোটে উল্লেখ করা হয়, চলতি মাসের ১৫ তারিখে মার্কিন কংগ্রেসে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে গণমাধ্যমের কিছু খবর আমাদের নজরে এসেছে। বিষয়টি যাচাই করতে গিয়ে দেখা গেল, মার্কিন কংগ্রেসে এমন কোনো আলোচনাই হয়নি। প্রতিনিধি পরিষদ, সিনেট কিংবা কংগ্রেসের সংশ্লিষ্ট কোনো কমিটিতে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে কথা হয়নি।
গত ১৫ আগস্ট জুমের মাধ্যমে টম ল্যানটোস হিউম্যান রাইটস কমিশনের (টিএলএইচআরসি) একটি ভার্চ্যুয়াল ব্রিফিং হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রণালয় জানায়, এতে এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশন ও এশিয়ান লিগ্যাল রিসোর্স সেন্টার, রবার্ট এফ. কেনেডি হিউম্যান রাইটস, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের চার প্যানেল সদস্য লিখিত বিবৃতি দিয়েছেন।
টম ল্যানটোস কমিশন আয়োজিত এই ব্রিফিংয়ে মার্কিন কংগ্রেসের কোনো সদস্য অংশ নেননি, বিবৃতি, মন্তব্য কিংবা পর্যবেক্ষণও দেননি। প্যানেল সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ সরকার ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করতেও ব্যর্থ হয়েছেন আয়োজকরা। নিবন্ধনের মাধ্যমে ভার্চ্যুয়াল অংশগ্রহণের অনুমোদন ছিল।
এতে আরও জানানো হয়, প্যানেল সদস্যদের দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাখ্যা চেয়ে ও আপত্তি জানিয়ে বেশ কিছু চিঠি দেওয়া হয়েছিল অনুষ্ঠানের মডারেটরকে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, সেই বিষয়গুলো বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। নিজেদের পছন্দের মন্তব্য ও প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন মডারেটর ও প্যানেল সদস্যরা।
তারা ইচ্ছাকৃতভাবে বাংলাদেশ সরকারের ভাবমর্যাদা নষ্ট করতে চেষ্টা করেছেন এমন দাবি করে মন্ত্রণালয় বলেছে, কাজেই এমনটা মনে করার কারণ আছে যে, বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে অপ্রমাণিত তথ্য দিতে এই প্ল্যাটফর্মকে ব্যবহার করেছেন বেশ কয়েকজন প্যানেল সদস্য।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জাতীয় শোক দিবসের দিনে এই ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়। এমন দিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের ১৮ জন সদস্যকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। এমন দিনে আযোজিত ব্রিফিংয়ে কিছু প্যানেল সদস্য অসংবেদনশীল আচরণ করেছেন বলেও জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
এমন অবস্থায় বাংলাদেশের বন্ধুদের বিভ্রান্ত করতে ভুল তথ্য প্রচারের বিরুদ্ধে সবাইকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানানো হয়।
মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের দ্বিদলীয় একটি সংগঠন ট্যাম ল্যানটোস কমিশন। মানবাধিকার নিয়ে কংগ্রেস সদস্যদের সচেতন করতেই এই কমিশন গঠন করা হয়েছে। তাদের আইন প্রণয়নের কোনো এখতিয়ার নেই।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের বর্ষপঞ্জি অনুসারে, আগামী ২৮ জুলাই অবকাশে যাচ্ছে কংগ্রেস (সিনেট ও প্রতিনিধি পরিষদ)। এরপর আগামী ৫ সেপ্টেম্বর সিনেটের অধিবেশন শুরু হবে। আর প্রতিনিধি পরিষদের অধিবেশন ফের শুরু হবে ১২ সেপ্টেম্বর। অবকাশের সময় অধিকাংশ সিনেটর ও কংগ্রেসম্যান তাদের নির্বাচনি এলাকা পরিদর্শন করেন।