দ্বিতীয় দফায় মহামারির প্রকোপে বিপর্যস্ত ভারতে আগামী মে মাসের মাঝামাঝি করোনা সংক্রমণ ভয়াবহ আকার নিয়ে দিনে ৩৩ থেকে ৩৫ লাখ মানুষ আক্রান্ত হতে পারেন। এমন শঙ্কার কথা জানিয়েছেন ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলোজির (আআইটি) বিজ্ঞানীরা।
এমন আশঙ্কার সঙ্গে আইআইটি বিজ্ঞানীরা বলছেন, মে মাসের শেষদিক থেকে ভারতে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হবে। ভারতে করোনা সংক্রমণের গতি লাগাম ছাড়া। গতদিন আক্রান্ত হয়েছে ৩ লাখ ৩২ হাজারের বেশি। দৈনিক করোনা আক্রান্তে এটা বিশ্বরেকর্ড। ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। করোনার দ্বিতীয় দফা প্রকোপে ইতোমধ্যে বেসামাল দেশটির রাজ্যগুলো। প্রতিদিন আক্রান্তের নিরিখে বিশ্বরেকর্ড গড়ছে ভারত। পাশাপাশি বেড়েছে মৃত্যুর সংখ্যা। আক্রান্ত দেশের তালিকার ভারত এখন দ্বিতীয় স্থানে।
এই পরিস্থিতিতে আইআইটি কানপুরের কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মণীন্দ্র আগরওয়াল জানিয়েছেন যে, মে মাসের ১১ থেকে ১৫ তারিখে ভারতে সম্ভাব্য দৈনিক সংক্রমণ ৩৩ থেকে ৩৫ লাখে গিয়ে ঠেকতে পারে। তার মত, যত দ্রুত করোনার এই প্রকোপ ঊর্ধ্বমুখী হবে ততই দ্রুত এটা নিম্নমুখী হবে। মে মাসের শেষের দিকে দৈনিক সংক্রমণ দ্রুত নিম্নমুখী হবে। তবে ততদিন পর্যন্ত অবশ্য দেশের মানুষকে যাবতীয় করোনা বিধি মেনে চলতে হবে ও সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
আইআইটি কানপুর এবং হায়দরাবাদের বিজ্ঞানীরা সূত্র মডেল গবেষণা করে দেখেছেন, মে মাসের মাঝামাঝি ভারতে সক্রিয় করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১০ লাখ বেড়ে যাবে। তাদের দাবি, জাতীয় রাজধানী অঞ্চল দিল্লি, হরিয়ানা, রাজস্থান এবং তেলেঙ্গানায় এপ্রিলের ৩০ তারিখ পর্যন্ত ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ চলবে। সংক্রমণের শীর্ষে ইতোমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছে দেশটিতে করোনায় সবচেয়ে বিপর্যস্ত রাজ্য মহারাষ্ট্র ছাড়াও আরেক রাজ্য ছত্তিশগড়।
গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে আরও ২ হাজার ২৬৩ জন কোভিড-১৯ রোগী প্রাণ হারিয়েছেন। অথচ মার্চের শুরুতেও দেশটিতে দৈনিক মৃত্যু ছিল ১০০ থেকে ১৫০’র ঘরে। ভারতে এ পর্যন্ত করোনা মোট প্রাণহানি হয়েছে ১ লাখ ৮৬ হাজার ৯২০ জনের।
ভারতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা এক কোটি ৬৫ লাখের বেশি। আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন এক কোটি ৩৬ লাখের বেশি। সক্রিয় করোনা রোগী ২৪ লাখ ২৮ হাজার ৬১৬। সুস্থতার হার ৮৩.৯ শতাংশ। এ পর্যন্ত টিকা নিয়েছেন ১৩ কোটি ৫৪ লাখ ৭৮ হাজার ৪২০। চিকিৎসকদের মতে, দ্বিতীয় দফায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে কম বয়সীরা। কারণ তারা বিভিন্ন জায়গায় কাজে যাচ্ছেন, যানবাহনে যাতায়াত করছে। অনেকের মানসিকতা তৈরি হয়েছে যে তাদের কিছু হবে না। কিন্তু তাদেরও এখন সতর্ক ও সাবধান থাকতে হবে।