নিজের ব্যক্তিগত ছবি অজ্ঞাতনামা এক নারীর সঙ্গে এডিট করে জুড়ে দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করার অভিযোগে যুবলীগ নেতাসহ আট জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছেন ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি কাজী হেদায়েত উল্লাহ সাকলাইন।
শনিবার (১২ আগস্ট) ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানায় এ মামলাটি ২০১২ সালের পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনের ৮(২)/৮(৩) ধারায় নথিভুক্ত করা হয়েছে। যে দুটি ধারায় মামলাটি করা হয়েছে ওই দুটি ধারা হচ্ছে- পর্নোগ্রাফি প্রদর্শনপূর্বক মর্যাদাহানি ও ইন্টারনেটে সরবরাহের অপরাধ। এ মামলায় আটজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা চার-পাঁচ জনকে বিবাদী করা হয়েছে।
বিবাদীরা হলেন, ভাঙ্গা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ আরাফাত, সদরপুরের চর আড়িয়াল গ্রামের কামরুল মাতুব্বর, কামাল মাতুব্বর, বিপ্লব মাতুব্বর, ভাঙ্গার চরপাড়া এলাকার তারিকুল ইসলাম, সদরপুরের হাজী নেওয়াজখার কান্দি গ্রামের সালাউদ্দিন খান ওরফে তানভীর, ভাঙ্গার দোপাশা গ্রামের সানি রহমান ও ভাঙ্গার ঝুমারকান্দি গ্রামের কিবরিয়া মুন্সী।
মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ৯ আগস্ট বিকেল আনুমানিক ৪টার দিকে আসামি শেখ আরাফাতের ফেসবুক আইডিতে দেখতে পাই আমার ব্যক্তিগত ছবি অজ্ঞাতনামা এক মহিলার সঙ্গে এডিট করে ফেসবুকে পোস্ট করে। পরে তিনি সব আসামির ফেসবুক আইডিতে ওই একই ছবি দেখতে পান।
অভিযোগ প্রসঙ্গে ভাঙ্গা উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ আরাফাত বলেন, এক নারীর সঙ্গে কাজী হেদায়েত উল্লাহ সাকলাইনের ওই ভিডিওটি তিনি প্রথমে ‘সদরপুর প্রতিদিন’ নামে এবং পরে ‘বিপ্লব মাতুব্বর’ নামে দুটি ফেসবুক আইডিতে দেখতে পান। এ ঘটনার সত্যতা জানার জন্য তিনি সেটি তার আইডিতে পোস্ট করেছিলেন। তিনি বলেন, কাজী হেদায়েত উল্লাহ সাকলাইন তার চাচা শ্বশুর। তার সঙ্গে পারিবারিক ও রাজনৈতিকভাবে বিরোধ রয়েছে। এ বিরোধের জেরে কাজী হেদায়েত উল্লাহ সাকলাইন তাকে এক নম্বর আসামি করে এ মামলাটি করেন।
কাজী হেদায়েত উল্লাহ সাকলাইন বলেন, যে ছবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে সেটি এডিট করা। আমি আরাফাতের ফেসবুক আইডিতে এ ডিভিও থেকে কাটা একটি ছবি দেখতে পাই। তিনি আরও বলেন, তিন মাস আগে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি তাকে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ দিয়ে চাচা সম্বোধন করে একটি ভিডিও না ছড়ানোর জন্য টাকা দাবি করেন। ভিডিওটি এডিট করা ছিল। নতুন করে সেই ভিডিও থেকে ছবি কেটে এডিট করে গত ৯ আগস্ট ওই ছবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলে আসায় আমি এ আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছি।
মামলার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়ারুল ইসলাম বলেন, কাজী হেদায়েত উল্লাহ সাকলাইন নিজে বাদী হয়ে আটজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও চার-পাঁচজনকে আসামি করে পর্নোগ্রাফি আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন। এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।