জাতিসংঘের কর্মকর্তা বাংলাদেশি লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) সুফিউল আনাম বলেছেন, আমি ভেবেছিলাম সবাই আমাকে ভুলে গেছে। কিন্তু যখন আমি এনএসআই সদস্যদের সঙ্গে দেখা করি, তখন আমাকে আশ্বস্ত করা হয়েছিল যে আমাকে ভুলে যাওয়া হয়নি।
বুধবার (৯ আগস্ট) সুফিউল আনামকে বহনকারী এমিরেটসের একটি ফ্লাইট সন্ধ্যা ৬টার দিকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
এর আগে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইয়েমেন থেকে তাকে অপহরণ করে আল-কায়েদা। জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দার (এনএসআই) সহায়তায় উদ্ধার হওয়ার পর ঢাকায় ফিরে এসেছেন তিনি।
সুফিউল তার আগমনের পর সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের কাছে তার বন্দিত্বের হতাশাজনক বর্ণনা দেন। তাকে উদ্ধার করে দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়ার জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।
সুফিউল বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি নির্দেশে এনএসআই কর্মকর্তারা আমাকে উদ্ধার করে। এজন্য ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স (এনএসআই) কর্মকর্তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।
ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, অপহরণের পর জীবিত বাড়ি ফিরতে পারব তা ভাবিনি। গত ১৮ মাস ধরে আমি খুব বিপজ্জনক পরিবেশে ছিলাম। আমি ভেবেছিলাম যেকোনো মুহূর্তে সন্ত্রাসীরা আমাকে মেরে ফেলবে।
এ সময় সুফিউল তাকে উদ্ধারকারী এনএসআই কর্মকর্তাদের পেশাদারিত্বের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, আমি তাদের পেশাদারিত্ব এবং তাদের দায়িত্ববোধ ভুলে যাব না।
কীভাবে তাকে অপহরণ করা হয়েছিল সে বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে সুফিউল বলেন, ১৮ মাস আগে যখন আমি পেশাগত দায়িত্ব থেকে ফিরে আসছিলাম তখন আমাকে অপহরণ করা হয়। বন্দিদশায় প্রতিদিনই মৃত্যুর ভয় দেখা দেয়। যা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না।
তিনি আরও বলেন, সন্ত্রাসীরা আমাদের পাহাড় ও মরুভূমিতে আটকে রেখেছিল। আমার চোখ সব সময় বেঁধে রেখেছিল সন্ত্রাসীরা। আমাদের বন্দিত্বের অবস্থান ১৮ বার পরিবর্তন করেছে। সৌভাগ্যক্রমে, তারা আমাকে নির্যাতন করেনি।
সুফিউল ইয়েমেনের রাজধানী এডেনে জাতিসংঘের নিরাপত্তা ও নিরাপত্তা বিভাগের ফিল্ড সিকিউরিটি কো-অর্ডিনেশন অফিসার (প্রধান) হিসেবে কর্মরত থাকাকালে তিনিসহ তার চার ইয়েমেনি সহকর্মীকে আল-কায়েদার সদস্যরা অপহরণ করেছিল। আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী পরে তার মুক্তির জন্য ৩০ লাখ ডলার মুক্তিপণ চেয়েছিল।
দেড় বছর বন্দি থাকার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) সুফিউল আনামকে উদ্ধার করে।