বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে জাতিসংঘ, আমেরিকা, ইউরোপীয় ইউনিয়সহ যারা আগ্রহ দেখাচ্ছে তাদের সমালোচনা করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি তাদের প্রতি প্রশ্ন রেখে বলেছেন, এত দেশে নির্বাচন হচ্ছে, ঘুরেফিরে বাংলাদেশের দিকে নজর কেন। পশ্চিমা দেশগুলোর মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়েও প্রশ্ন তোলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী।
মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকীতে ছাত্রলীগ আয়োজিত ‘বাংলার মাতা, বাংলাদেশের নেতা’ শীর্ষক ছাত্রী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন ওবায়দুল কাদের।
পশ্চিমাদের সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং আমেরিকার কাছে জানতে চাই, বাংলাদেশ কী এমন অপরাধ করেছে। সবাই শুধু ঘুরেফিরে বাংলাদেশ নিয়ে কথা বলে কেন?’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এই বছর বিশ্বের মোট ২২টি দেশে নির্বাচন হয়েছে। বাংলাদেশ কী এমন অপরাধ করেছে যে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাতিসংঘ, আমেরিকার প্রতিনিধিরা ঘুরে ঘুরে বাংলাদেশে আসে। সোমালিয়ার খবর নেই, কঙ্গোর খবর নেই। প্রতিদিন সুদানে জেনারেলদের সংঘর্ষের বলি হচ্ছে নিরীহ মানুষ। লাখ লাখ মানুষ উদ্বাস্তু হচ্ছে। এসম নিয়ে তাদের কোনো মাথা ব্যথা নেই।’
কাদের বলেন, ‘বিশ্ব রাজনীতিতে আজ যারা মোড়ল, মাতব্বর সেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মানবাধিকার নেই। সেখানে গণতন্ত্র নেই এবং খুনের সংখ্যা বাড়ছেই। তারা আমাদের গণতন্ত্রের সবক দেয় কিন্তু তারা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে পারে না। তারা ইসরায়েলকে থামায় না। এ সময় মানবাধিকার কোথায় থাকে?’
বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘চার-পাঁচ দিন ধরে দেখছি তাদের সুর নরম হয়ে আসছে। এক দফারও বেলা শেষ। দম ফুরিয়ে আসছে। চোখে-মুখে অন্ধকার দেখছে তারা। শুকিয়ে গেছে চোখ-মুখ। আমাদের প্রতিনিধি দল ভারত যাওয়ায় বিএনপি নেতাদের ঘুম নেই। বিদেশে আমাদের বন্ধু আছে। প্রভু নেই। ক্ষমতায় বসাবে বাংলাদেশের জনগণ।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের সমালোচনা করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের ছেলে রাজনীতি আর করবে না বলে মুচলেকা দিয়ে বিদেশে পলায়ন করেছে। এখন শুধু রাজনীতি করে না, প্রতিদিন বক্তৃতা দেয়, প্রতিদিন পরামর্শ দেয়। আদালতের রায় অনুসারে সে দণ্ডিত আসামি। তার কোনো বক্তব্য প্রচার হবে না। এরপরেও আদালতের রায় অমান্য করে কেন প্রতিদিন তাকে কারা উৎসাহ দিল। আজকে সে লন্ডনে বসে বসে মানবাধিকারবিরোধী, রাজনৈতিক মিথ্যাচার করে যাচ্ছে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘যারা ১৫ আগস্টের খুনি তাদের হাতে গণতন্ত্র নিরাপদ নয়, মানবাধিকার নিরাপদ নয়, মুক্তিযুদ্ধ নিরাপদ নয়।’
ঢালাওভাবে আইনের অপব্যবহার রোধে সরকার ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের পরিবর্তন করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট করা হচ্ছে। ক্যাবিনেটে প্রস্তাব পাস হয়েছে। নতুন প্রস্তাবনা এখনো আসেনি। আমার সিদ্ধান্তটা সঠিক কি বেঠিক, এটা আমি জনগণের কাছে শুনবো। সেখানে যদি কোনো কারেকশনের দরকার হয়, সেটা আমি করব। এটাই জনগণের সরকার।
ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন, সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত।