বৃষ্টির সময় ফেনীর পরশুরাম সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে ছাতা মাথায় দিয়ে ক্লাস করতে হয় শিক্ষার্থীদের। বিদ্যালয়টির একটি দ্বিতল ভবন ছাড়া সবগুলোই ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। রোদ বৃষ্টি ঝড়ে পুরাতন শ্রেণিকক্ষেই ক্লাস করতে শিক্ষার্থীদের। বৃষ্টি নামলে শ্রেণিকক্ষের ভেতরে ছাতা মাথায় দিয়েই ক্লাস করতে হয় তাদের।
রোববার (৬ আগস্ট) সকালে পরশুরাম সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আতাউর রহমান চৌধুরী ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিদ্যালয়ের সাড়ে ৭ শর বেশি শিক্ষার্থীর জন্য মানসম্মত শুধু একটি দ্বিতল ভবন রয়েছে। অন্যগুলোর নাজুক অবস্থা। ছাতা মাথায় দিয়ে ক্লাস করা শিক্ষার্থীরা ৮ম শ্রেণির। ওই কক্ষে অসংখ্য টিনে ছিদ্র হয়ে গেছে। বৃষ্টির পানি জমে স্যাঁতস্যাঁতে অবস্থা। পাঠদান চলা অবস্থায় বৃষ্টি আসায় নিরুপায় হয়ে সেখানে বসে থাকতে হয়েছে।
বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের বিষয়ে পদক্ষেপের কথা জানিয়ে প্রধান শিক্ষক বলেন, বিদ্যালয়ের যে ভবন রয়েছে সেগুলো ষাটের দশকের। নতুন ভবনের জন্য শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে প্রতিনিধি আসলেও কোনো সুফল মেলেনি। এছাড়াও এ বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ জনপ্রতিনিধিদের অবহিত করা হয়েছে। শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের দুর্ভোগ লাঘবে নতুন ভবনের বিকল্প নেই।
এমরান হোসাইন নামে এক শিক্ষার্থী বলে, বৃষ্টির সময় মাথায় ছাতা দিলেও আমাদের বই-খাতা ভিজে গেছে। পায়ের নিচে থাকা পানির কারণে শরীরে কাদা লাগে।
পেয়ার আহম্মদ বাবলু নামে এক অভিভাবক বলেন, শিক্ষার্থীরা মাথায় ছাতা দিয়ে ক্লাস করছে- এটি এই সময়ে অবিশ্বাস্য। জরাজীর্ণ কক্ষে পাঠদানে শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ চরমে। এছাড়া পাশে আরেকটি ভবন আছে যেটি যে কোনো সময় ধসে পড়তে পারে। এই বছরও যেই বিদ্যালয় ফলাফলে উপজেলায় সর্বোচ্চ ছাত্র-ছাত্রী জিপিএ-৫ অর্জন করেছে সেখানকার এমন জরাজীর্ণ শ্রেণিকক্ষ কোনো ভাবেই কাম্য নয়।
এ বিষয়ে পরশুরাম উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সফিউল আলম তালুকদার বলেন, উপজেলার সুপ্রতিষ্ঠিত এ বিদ্যালয়ের এমন দৃশ্য দুঃখজনক। নতুন ভবনের বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্যের প্রতিনিধিকে জানিয়েছিলাম। এছাড়াও শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের চাহিদা তালিকায় প্রথমেই নাম দেওয়া হয়েছে। এখানে একটি নতুন ভবনের খুব প্রয়োজন।
পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দা শমসাদ বেগম জানান, নতুন ভবনের বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের আওতার মধ্যে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। ইতোপূর্বে এ বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্যকে অবহিত করা হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, এ বিদ্যালয় থেকে ২০২৩ সালের এসএসসি পরীক্ষায় ১৭৫ জন অংশ নিয়ে ১৫১ জন উত্তীর্ণ হয়েছে। এতে ৩১ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়ে উপজেলার শীর্ষ সফল প্রতিষ্ঠানের তালিকায়ও স্থান করে নিয়েছে।