ভারতের মণিপুর রাজ্যে নতুন করে তীব্র সহিংসতা শুরু হয়েছে। এর ফলে গত ২৪ ঘণ্টায় চলা সংঘর্ষে পিতা-পুত্রসহ ছয়জন নিহত হয়েছেন। শনিবার সকাল থেকে বিষ্ণুপুর-চুরাচাঁদপুর সীমান্ত এলাকায় দিনব্যাপী হামলায় প্রায় ১৬ জন আহত হয়েছেন।
ভারতীয় সেনাবাহিনী এই এলাকায় একটি বড় চিরুনি অভিযান শুরু করেছে। এ সময় অন্তত একজন বিদ্রোহীকে গুলিতে আহত হওয়ার পর গ্রেফতার করা হয়।
কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে, দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার মণিপুর রাজ্যে সেনাবাহিনীর ১০টি অতিরিক্ত কোম্পানি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এ রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার কারণে আজ ইম্ফল পূর্ব এবং ইম্ফল পশ্চিমের জেলাগুলোতে কোনো কারফিউ শিথিল করা হবে না বলে জানিয়েছে ভারতীয় পুলিশ।
গত ৩ মে থেকে কুকি ও মেইতেই জনজাতির সংঘর্ষের কারণে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মণিপুর। সেখানে তফসিলি উপজাতির স্বীকৃতির দাবি জানিয়েছেন মেইতেইরা। এ বিষয়টি নিয়েই দুই জনজাতির মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি।
শনিবার ভোর থেকে বিষ্ণুপুর-চুড়াচাঁদপুর সীমানা এলাকায় দুই গোষ্ঠীর মধ্যে গুলি বিনিময় শুরু হয়। উভয় পক্ষের গুলি ছোড়াছুড়িতে তিন গ্রামবাসীর মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে এক বাবা এবং ছেলে রয়েছেন। বিষ্ণুপুর জেলার কাওয়াকটা এলাকার একটি গ্রামে এই ঘটনা হয়েছে।
৩ মে মণিপুরে তীব্র সহিংসতার পর থেকে ওই গ্রামের বাসিন্দারা আশ্রয় শিবিরে থাকছিলেন। শুক্রবার রাতে কয়েকজন বাসিন্দা নিজেদের গ্রাম পাহারা দেওয়ার জন্য ফিরেছিলেন। এরপর শনিবার ভোর থেকে ফের শুরু হয় সংঘর্ষ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নিহতদের দু’জনের শরীরে ধারাল অস্ত্রের কোপ মারা হয়েছে। এরপর কাছ থেকে গুলি করে তাদের মারা হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে পাল্টা হামলা শুরু হয়। মর্টার শেল এবং গ্রেনেড ছোড়ে তারা। তাতে কাওয়াকটা সংলগ্ন দু’টি গ্রাম ফুজং এবং সংদোয় দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন কয়েকজন। ওই গ্রাম দু’টি চুড়াচাঁদপুর জেলায় পড়ে।
একইসঙ্গে বিষ্ণুপুর জেলার তেরাখোংসাংবিতে গোলাগুলি হয়েছে। তাতে মারা গেছেন একজন। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন তিনজন। তাদের মধ্যে রয়েছেন এক পুলিশ কর্মী। পূর্ব ইম্ফল জেলার সানাসাবি ও থামনাপোকপি গ্রামেও গুলিবর্ষণ করা হয়েছে।