জানা গেছে, কয়েকদিন আগে ৫০ ব্যাচের ছাত্র মারুফ ও রাকিব ভুক্তভোগী ইমরানকে ডেকে নিয়ে ‘সেক্রেটারির গ্রুপে কারা রাজনীতি করতে চায়’ তাদের তালিকা দিতে বলেন। কিন্তু তিনদিন পেরিয়ে যাওয়ার পরও তিনি কোনো সাড়া না দেওয়ায় গতকাল শুক্রবার দুপুরে তাকে ডেকে ৩৫১(১/২) নম্বর কক্ষে নিয়ে বেধড়ক মারধর করেন মারুফ।
মারুফকে ওই কক্ষে রড নিয়ে ঢুকতে দেখা যায়। ঘটনার সময় সেখান থেকে চিৎকার চেচামেরির শব্দ পাওয়া যাচ্ছিল। শুক্রবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, প্রভোস্ট কমিটির সদস্যরা গণরুমে গেলে তাদের ভুক্তভোগীর কাছ থেকে শোনা ঘটনার বর্ণনা করেন তার একাধিক সহপাঠী ।
নাম প্রকাশ না করা ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের এক ছাত্র জানান, ঘটনার সময় তিনি গণরুমে ছিলেন। মারুফ গণরুমের দরজায় লাথি মেরে ইমরানকে ডেকে নিয়ে যান। প্রথমে তাকে হলের ছাদে নিয়ে পেটানো হয়। পরে ৩৫১ (১/২) নম্বর রুমে নিয়ে আবারও রড দিয়ে মারধর করা হয়। মারুফ প্রায়ই কোনো কারণ ছাড়াই জুনিয়রদের চড়-থাপ্পড় ও গায়ে জুতা ছোড়েন।
ভুক্তভোগী ইমরান বলেন, সিনিয়ররা আমাদের গণরুমে থাকা শিক্ষার্থীদের নামের লিস্ট করতে বলে। কিন্তু এ কাজে দেরি হলে তারা আমাদের রুমে ডেকে নিয়ে বকাঝকা করেন। তবে আমাদের মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি। ভুক্তভোগী মাহবুবুল ইসলাম পিকুলও রড দিয়ে মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করেন। এসময় হল প্রভোস্ট, প্রক্টর ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
ভুক্তভোগীরা মার খাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করলেও তাদের অনেক সহপাঠী বলছেন, ফের মারধর করা হতে পারে, এ ভয়ে ইমরান ও পিকুল বিষয়টি এড়িয়ে গেছে। ৩৫১(১/২) রুমের বিছানায় একটি রড পাওয়া গেছে, যেটি দিয়ে তাদের মারধর করা হয়।
এ বিষয়ে জানার জন্য মারুফের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক সাব্বির আলম বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে অভিযোগ তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত ব্যবস্থা নেব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, আমি হলের প্রভোস্টের ফোন পেয়ে ১০ মিনিটের মধ্যে প্রক্টরিয়াল টিম নিয়ে গণরুমে যাই। অভিযুক্ত কাউকেই খুঁজে পাইনি। হলের প্রভোস্টকে দ্রুত তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে অনুরোধ করেছি। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।