ফরমায়েশি রায়ের মাধ্যমে তারেক রহমান ও জোবাইদাকে সাজা দেওয়ার চক্রান্ত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।
মঙ্গলবার (০১ আগস্ট) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই অভিযোগ করেন।
তার দাবি, অতীতে খালেদা জিয়াসহ আমাদের অনেক নেতাকে ফরমায়েশি রায়ের মাধ্যমে সাজা দেওয়া হয়েছে। একই প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তাদের ফরমায়েশি রায়ের মাধ্যমে সাজা দেওয়ার চক্রান্ত করা হচ্ছে।
দুর্নীতির মামলায় আগামীকাল বুধবার (০২ আগস্ট) বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় রায়ের দিন ধার্য রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ঘোষিত আয়ের বাইরে ৪ কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার মালিক হওয়া এবং সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে রাজধানীর কাফরুল থানায় এ মামলা করে দুদক। মামলায় তারেক রহমান, জুবাইদা রহমান ও তার মা ইকবাল মান্দ বানুকে আসামি করা হয়। ২০০৮ সালে তিনজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়।
পরবর্তীতে জুবাইদার আবেদনে ওই বছরই মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এর বিরুদ্ধে আপিল করলে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন। এ সংক্রান্ত চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল হাইকোর্ট জুবাইদার আবেদন খারিজ করে দেন।
এই মামলায় সাজা হলে আগামী নির্বাচনে ডা. জোবাইদা রহমানের অংশ নেওয়ার সুযোগ বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের প্রিয় নেতা তারেক রহমান ও তার স্ত্রীকে সরকারি নীল নকশায় মিথ্যা মামলায় হয়তো সাজার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অথচ এই মামলা চলার মতো কোনো আইনগত উপাদান নেই।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশে লাখ লাখ মামলার জট থাকলেও তাদের এই মামলায় ১৬ দিনে ৪২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। রাত ৮টা থেকে ৯টা পর্যন্ত একতরফাভাবে সাক্ষী নেওয়া হয়েছে। আমাদের আইনজীবীরা এ ধরনের বিচার কাজের বৈধতা বিষয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করতে গেলে তাদের ওপর পুলিশ ও সরকার দলীয় আইনজীবীরা একাধিকবার হামলা চালিয়েছে। তাদেরকে আদালত কক্ষ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে বিচারের নামে ক্যামেরা ট্রায়াল চালানো হয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই সরকার দীর্ঘদিন অবৈধভাবে ক্ষমতায় থেকে রাষ্ট্রের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে ফেলেছে। রাষ্ট্রের অন্যতম স্তম্ভ বিচার বিভাগ তার মধ্যে অন্যতম। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) শুধুমাত্র সরকারের আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠানই নয়, বিরোধী দলীয় দমন কমিশনে পরিণত হয়েছে। আমরা সর্বক্ষেত্রে বিচারের নামে প্রহসন প্রত্যক্ষ করছি।
তিনি বলেন, আমাদের দলীয় প্রধানকে মিথ্যা মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে। তাকে দীর্ঘ বছর ধরে কারাবন্দি করে রাখা হয়েছে। নিম্ন আদালতের সাজা উচ্চ আদালতে নজিরবিহীনভাবে বৃদ্ধি করা হয়েছে। একজন বয়স্ক ও নারী হিসাবে আইনগতভাবে তার জামিন পাওয়ার অধিকার থাকলেও সেই অধিকার থেকে তাকে বঞ্চিত করা হয়েছে।
সরকার গত ১৪ বছরে সারাদেশে মিথ্যা ও গায়েবি মামলায় প্রায় ৪০ লাখ মানুষকে আসামি করেছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা।
তিনি বলেন, শত শত নেতাকর্মীকে সাজা দেওয়া হয়েছে। চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনের দিক নির্দেশনা দানকারী বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে নির্বাসিত করা হয়েছে। আবার নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। মূল লক্ষ্য হচ্ছে খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ সব দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক নেতাদের রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেওয়া।