নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান বলেছেন, ভোটারদের উপস্থিতির দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের না। উপস্থিতি বাড়ানোর দায়িত্ব প্রার্থীদের। তাদের প্রচার-প্রচারণা এবং তৎপরতা থাকতে হবে। আরেকটি বিষয়, জাতীয় নির্বাচনের আর মাত্র কয়েকমাস বাকি। এর মধ্যে উপনির্বাচন হচ্ছে। এ কারণে হয়তো ভোটারদের উপস্থিতি একটু কম হচ্ছে। ঢাকা-১৭ আসনে ১১ দশমিক ৫ শতাংশ ভোটার উপস্থিত হয়েছেন। তবে ভোটারের উপস্থিতি যাই হোক আমরা তার ভিত্তিতে ফল ঘোষণা করব। অতীতেও করেছি এবং ভবিষ্যতেও করব।
রোববার (২৩ জুলাই) বিকেলে চট্টগ্রাম-১০ আসনের উপনির্বাচন সামনে রেখে প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
নির্বাচনে প্রার্থীদের ওপর হামলার প্রসঙ্গে আনিছুর রহমান বলেন, এটি নিন্দনীয় কাজ। ঢাকা-১৭ আসনে নির্বাচন শেষ হওয়ার একটু আগে প্রার্থীর ওপর হামলা হয়েছে, যেটি অনাকাঙ্ক্ষিত। এ ঘটনা তদন্তাধীন রয়েছে। এতে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বরিশাল সিটি নির্বাচনেও এরকম ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনা যারা করে তারা কারও উদ্দেশ্য সফল করার জন্য করে নাকি দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য করে তাও প্রশ্নসাপেক্ষ।
তিনি আরও বলেন, আমাদের কাছে প্রার্থী ছোট-বড় বলে কিছু নেই। প্রার্থী যেই হোক তার নিরাপত্তা বিধান আমাদের দায়িত্ব। এখন প্রার্থীদের সঙ্গে সাদা পোশাকে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা রয়েছেন এবং প্রার্থীদেরকে বলেছি তারা যেখানে যাবে সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশকে যাতে অবহিত করে। প্রার্থীদের নিরাপত্তা ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দুটি দলকে নিবন্ধন দেওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা কিন্তু এখনো কোনো দলকে নিবন্ধন দেইনি। মাঠ পর্যায় থেকে তথ্যউপাত্ত নিয়ে আমরা বলেছি, দুটি দল নিবন্ধনের জন্য সব যোগ্যতা অর্জন করেছে। তাদের বিষয়ে যদি কোনো আপত্তি থাকে তাহলে ২৬ জুলাইয়ের মধ্যে জানাতে বলেছি। এখন এর মধ্যে কেউ অভিযোগ দিলে সেটি ২৬ তারিখের পর যাচাই-বাছাই করা হবে। এরপর নিবন্ধনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
নির্বাচনের আগে প্রশাসনে রদবদল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বদলি নিয়মিত প্রক্রিয়া। এখনো প্রশাসন আমাদের আওতার বাইরে। যখন তফসিল ঘোষণা করা হবে, তখন বদলি নিয়োগ সব আমরা করতে পারব। তখন অভিযোগ থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
একজনের ভোট আরেকজন দিচ্ছে এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন, নির্বাচনে ভোটার কেন্দ্রে এসে ভোট দিতে পারেননি, এরকম অভিযোগ আমরা পাইনি। ইভিএম পদ্ধতিতে একজনের ভোট আরেকজনের দেওয়ার তো সুযোগ নেই। এখন কেউ কেন্দ্রে না এসে বাড়িতে বসে অভিযোগ দিলে তো আমাদের করার কিছু নেই। এখন প্রত্যেক কেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা থাকে, শুধুমাত্র গোপন কক্ষ ছাড়া। ওই কক্ষে কেউ ঢুকতে পারে না। আবার বাইরের সব দৃশ্য কিন্তু আমরা সিসিটিভি ক্যামেরায় দেখতে পারি।
চট্টগ্রাম-১০ আসনের উপনির্বাচনে বিষয়ে ইসি আনিছুর বলেন, এই আসনে নির্বাচন হবে সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ। এক্ষেত্রে সবাইকে সতর্কভাবে দায়িত্ব পালনের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনের বিষয়ে এখনো কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। সব প্রার্থী নির্বিঘ্নে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছে। রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে এক প্রার্থীর প্রধান কার্যালয়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে কিন্তু মামলা হয়েছে এবং গ্রেপ্তার হয়েছে। এছাড়া বিভিন্নজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আমরা বলেছি, কোনো ঘটনাকে ছোট করে দেখলে হবে না। একটি কারণে কিন্তু আরেকটি ঘটনা ঘটে।
এর আগে গত ২ জুন চট্টগ্রাম-১০ আসনের তিনবারের সংসদ সদস্য ডা. আফছারুল আমীনের মৃত্যু হয়। ৪ জুন আসনটি শূন্য ঘোষণা করে সংসদ সচিবালয়। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ৩০ জুলাই এই আসনের উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।