চিত্রনায়ক ও সংসদ সদস্য (এমপি) বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেন পাঠান ফারুকের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া আসনে আজ যে উপনির্বাচন চলছে তাতে অন্যতম বিতর্কিত প্রার্থী কনটেন্ট ক্রিয়েটর আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম।
ঢাকা-১৭ আসনের এ নির্বাচনে ভোট শুরুর দু’ঘণ্টার মাথায়ই হিরো আলম অভিযোগ করেছেন, কেন্দ্রগুলো থেকে তার এজেন্টদের বের করে দেওয়া হচ্ছে।
বনানী মডেল স্কুল কেন্দ্র পরিদর্শনে এসে এ অভিযোগ করেন তিনি।
হিরো আলম বলেন, এই নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কি না জানি না। তবে এখন পর্যন্ত আমাদের এজেন্টদের বের করে দেওয়া হচ্ছে। আমার সঙ্গে কয়েকজন এজেন্ট আছে, তাদেরও বের করে দেওয়া হয়েছে। তাদের মোবাইল কেড়ে নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের এজেন্টদের বের করে দিয়ে তারা একতরফা ভোট করার চেষ্টা করছে। তা না হলে কেন আমাদের এজেন্টদের বের করে দেওয়া হবে? মহিলা এজেন্টরাও ছাড় পাননি, তাদেরও ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া হয়েছে।
হিরো আলম বলেন, ফলাফল কী হবে সেটা বিষয় না, আমরা শেষ সময় পর্যন্ত দেখব। দেখতে চাই তারা আমাদের ওপর কত অত্যাচার করতে পারে। নির্বাচন কমিশনে বিষয়টি জানানোর পর বললো যে তারা দেখবে। এভাবে চললে তাদের ওপর আস্থা রাখা সম্ভব নয়।
ইউটিউবে ভিডিওর মাধ্যমে আলোচনায় আসা হিরো আলম এখন দেশের রাজনীতির অঙ্গনে বেশ আলোচিত ব্যক্তিত্ব। ঢাকার এ নির্বাচনের আগে বগুড়ার উপনির্বাচনেও অংশ নেন তিনি। বগুড়া-৪ আসনে মহাজোট প্রার্থী এ কে এম রেজাউল করিম তানসেনের সঙ্গে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তিনি।
বগুড়ায় এই ভোটের পর ঢাকায় এক সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, এটা প্রমাণিত হয়েছে উপ-নির্বাচনগুলোতে। আজ প্রমাণ হয়েছে, আওয়ামী লীগ এক হিরো আলমের কাছেও কতটা অসহায়। রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে তার বিরুদ্ধেও আওয়ামী লীগকে জিততে হয় ৬/৭শ ভোটে।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, হিরো আলমকে বিএনপি নির্বাচনে দাঁড় করিয়েছে। তারা সংসদকে ছোট করার জন্য হিরো আলমকে প্রার্থী করেছে।
রাজনীতিতে হিরো আলমের অংশগ্রহণ নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে মত রয়েছে। সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও হিরো আলমের উপস্থিতিকে ভালো চোখে দেখেন না অনেকেই।
ঢাকা-১৭ আসনের এ উপনির্বাচনে মনোনয়ন জমা দেওয়ার পর হিরো আলমের মনোনয়ন প্রথমে বাতিল হয়। পরে নির্বাচন কমিশনে আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে প্রার্থিতা ফিরে পান তিনি।
নির্বাচনী প্রচারণার সময়ও বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন হিরো আলম। এ জন্য গত ৫ জুন নির্বাচন কমিশনে (ইসি) রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগও দিয়েছিলেন তিনি।
অভিযোগে হিরো আলম বলেছিলেন, মহাখালীর সাততলা বস্তিতে প্রচারে গিয়েছিলাম। সেখানে আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মী বস্তির গেটে আমাদের জানায় আমরা সেখানে প্রবেশ করতে পারব না। কারণ হিসেবে তারা জানায়, সেখানে তারা মোহাম্মদ এ আরাফাত (নৌকার প্রার্থী) ভাইয়ের প্রচার-প্রচারণা চালাবে। এরপর আমরা সেখানে প্রবেশ করতে চাইলে সেখানকার নারীরা আমাদের গায়ে হাত তোলে। আমাদের একজন গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছে। তারা আমাদের ইট ছুড়েছে, জুতা মেরেছে ও গায়ে হাত তুলেছে। তারা বোঝাচ্ছে যে নৌকা ছাড়া সেখানে কাউকে ঢুকতে দেবে না। আজকেই যদি এমন পরিস্থিতি হয়, তাহলে ভোটের দিন সরাসরি বলবে নৌকা ছাড়া কোনো ভোট হবে না। তারা সরাসরি নৌকায় সিল মারবে। আজকে ভোটারদের কাছে পৌঁছাতে দিলো না। ভোটের দিন আমাকে যে ভোট দিতে দেবে এ বিশ্বাস হারিয়ে গেছে।