যুক্তরাষ্ট্রের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া বলেছেন, গণতন্ত্র সমুন্নত রাখাসহ মানবাধিকারের প্রতি সম্মান বজায় রেখে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
চার দিনের বাংলাদেশ সফর নিয়ে শুক্রবার (১৪ জুলাই) আন্ডার সেক্রেটারিকে উদ্ধৃতি করে তার এমন বক্তব্য এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায় ঢাকার মার্কিন দূতাবাস।
উজরা বলেন, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের সমৃদ্ধি ও স্বাধীনতা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে আমাদের লক্ষ্য পূরণে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।
মার্কিন দূতাবাসের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া ব্যুরোর অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু’সহ ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাদের একটি প্রতিনিধিদল ঢাকা ও কক্সবাজারে ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা, নাগরিক সমাজের সদস্য, রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং মানবিক সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করতে আগামী ১১-১৪ জুলাই বাংলাদেশ সফর শেষ করেছেন।
বাংলাদেশ সফরকালে আন্ডার সেক্রেটারি জেয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং বাংলাদেশ সরকারের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
এছাড়া তিনি শ্রমিক আন্দোলন-কর্মী, নাগরিক সমাজের নেতাদেরসহ মানবাধিকার রক্ষাকর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এসব বৈঠকে জেয়া বাংলাদেশের অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্য অর্জনে একসঙ্গে কাজ করার গুরুত্বের ওপর জোর দেওয়ার পাশাপাশি নাগরিক সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা, মানবাধিকার রক্ষাকর্মী, সাংবাদিক ও শ্রমিক আন্দোলন কর্মীদের নিরাপত্তার গুরুত্ব; মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য জবাবদিহিতা থাকা এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য সমর্থন অব্যাহত রাখার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
তিনি কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলো পরিদর্শন ও সেখানকার ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গেও কথা বলেন। এসময় তিনি রোহিঙ্গা সঙ্কট মোকাবিলায় বার্মা এবং বাংলাদেশের উদ্যোগগুলোর সমর্থনে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আরও ৭৪০ কোটি টাকার বেশি (৭৪ মিলিয়ন ডলার) অনুদানের ঘোষণা করেছেন, যার মধ্যে প্রায় ৬১০ কোটি টাকা বার্মায় অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা, বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থী ও তাদের আশ্রয়দানকারী জনগোষ্ঠীসহ অন্যান্যদের সহায়তার জন্য দেওয়া হবে।
এর মধ্য দিয়ে ২০১৭ সাল থেকে এ অঞ্চলে রোহিঙ্গা ও তাদের আশ্রয়দানকারী জনগোষ্ঠীর জন্য আমেরিকার সহায়তার পরিমাণ ২১ হাজার কোটি টাকা ছাড়াল।
এছাড়াও আন্ডার সেক্রেটারি জেয়া ফ্রিডম ফান্ড এবং এর অংশীদারদের জন্য স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে ১০ কোটি টাকারও বেশি (১ মিলিয়ন ডলার) অনুদান ঘোষণা করেন। এ টাকা মানব পাচারকারীদের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া ৫০০-এরও বেশি শিশুকে সমাজে পুনঃএকত্রীকরণের কর্মসূচিতে ব্যবহার করা হবে।
যুক্তরাষ্ট্র মানব পাচার মোকাবেলায় সরকার ও নাগরিক সমাজের সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে নিবেদিতভাবে কাজ করছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেন মার্কিন দূতাবাস।