বেতন বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন করায় ১৭ হাজার শিক্ষকের বেতন বন্ধ করে দিয়েছে উত্তর আফ্রিকার দেশ তিউনিসিয়া। একইসঙ্গে সাড়ে তিনশো স্কুলের অধ্যক্ষকে বরখাস্তও করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।
উত্তর আফ্রিকার এই দেশটি বর্তমানে মারাত্মক অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে রয়েছে এবং তিউনিসিয়া কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্ত দেশটিতে পরিস্থিতি আরও খারাপ করে তুলবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সোমবার (১০ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিউনিসিয়া ১৭ হাজার শিক্ষকের বেতন প্রদান স্থগিত করেছে এবং বেতন বৃদ্ধির দাবিতে বিক্ষোভের জন্য ৩৫০ স্কুলের অধ্যক্ষকে বরখাস্ত করেছে বলে কর্তৃপক্ষ সোমবার জানিয়েছে।
রয়টার্স বলছে, প্রতিবাদ-আন্দোলনের জেরে বেতন স্থগিতাদেশের এই সিদ্ধান্ত উত্তর আফ্রিকার এই দেশটির প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রায় ৩০ শতাংশকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এছাড়া তিউনিসিয়ার নাগরিকরা আগে থেকেই মারাত্মক অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে রয়েছেন এবং বতেন বন্ধের বিষয়ে সরকারের এই সিদ্ধান্ত শক্তিশালী ইউজিটিটি ইউনিয়নের সাথে বিরোধ আরও বাড়িয়ে তুলবে।
অন্যদিকে নিজেদের প্রতিবাদের অংশ হিসেবে তিউনিসিয়ার শিক্ষকরা স্কুলে শিক্ষার্থীদের গ্রেড দিতে অস্বীকার করেছেন। তিউনিসীয় শিক্ষামন্ত্রী মোহাম্মদ আলী বোগদিরি বলেছেন, ‘স্কুলের গ্রেড পেতে শিক্ষার্থীদের ব্যর্থতা কার্যত একটি বিপর্যয় এবং এটি শিশুদের বিরুদ্ধে অপরাধ।’
ইউনিয়নের কর্মকর্তা ইকবেল আজাবি রয়টার্সকে বলেছেন, বেতন বন্ধের এই সিদ্ধান্তের লক্ষ্য হচ্ছে তিউনিসিয়ার ‘শিক্ষকদের অনাহারে’ রাখা এবং প্রত্যাশিত প্রতিবাদ ও আন্দোলনের কারণে পরবর্তী স্কুল মৌসুমও বেশ কঠিন হবে। এছাড়া ইতোমধ্যেই শত শত স্কুলের অধ্যক্ষ তাদের পদত্যাগপত্র জমা দিতে শুরু করেছেন।
তিউনিসিয়ার শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, দেশের সরকারি অর্থে শিক্ষকদের এসব দাবি পূরণ করার সুযোগ নেই।
রয়টার্স বলছে, মন্ত্রণালয় এবং ইউনিয়নের মধ্যে এই দ্বন্দ্ব তিউনিসিয়ায় চলমান সংকটকে আরও গভীর করবে বলে হাজার হাজার পরিবার আশঙ্কা করছে। একইসঙ্গে এই ধরনের অবস্থা চলতে থাকলে তা পরবর্তী স্কুল মৌসুমকেও হুমকির মুখে ফেলবে বলে আশঙ্কা তাদের।
মূলত উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি, নিম্নমানের জনসেবা এবং খাদ্যদ্রব্য ইস্যুতেও ইতোমধ্যেই ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে তিউনিসিয়ার হাজারও মানুষ।