রোস্তভ-অন-দনের পর রাশিয়ার দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলের দ্বিতীয় আরেকটি শহরের সামরিক সব স্থাপনা ওয়াগনার যোদ্ধারা দখলে নিয়েছেন। শনিবার রোস্তভ-অন-দন ও রাজধানী মস্কোর মধ্যবর্তী ভোরোনেজ শহরের সব সামরিক স্থাপনা ওয়াগনার দখলে নিয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রের বরাত দিয়ে নিশ্চিত করেছে বিবিসি।
তবে ভোরোনেজ শহর কর্তৃপক্ষ ওয়াগনারের সৈন্যদের দখলের বিষয়ে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও মন্তব্য করেনি। ভোরোনেজ অঞ্চলের গভর্নর আলেকজান্ডার গুসেভ ওই অঞ্চলে সাঁজোয়া যানের বহরের চলাচলের ব্যাপারে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে স্থানীয়দের সতর্ক করে দিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, পূর্বের ঘোষণা অনুযায়ী রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে ভোরোনেজ অঞ্চলে সন্ত্রাসবিরোধী ও যুদ্ধকালীন তৎপরতা শুরু করেছে। এর মাঝেই ভোরোনেজের একটি তেল শোধনাগারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসা কিছু ভিডিওতে ওই তেল শোধনাগারে বিমান হামলা হয়েছে দাবি করা হচ্ছে।
গভর্নর আলেকজান্ডার গুসেভ বলেছেন, রুশ শহর ভোরোনেজের একটি তেল শোধনাগারের জ্বালানি ট্যাঙ্কের আগুন নিভিয়ে ফেলা হয়েছে। এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ভোরোনেজের দিমিত্রভের সড়কের একটি তেল শোধনাগারের জ্বালানি ট্যাঙ্কের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। শতাধিক দমকলকর্মী ও ৩০টি গাড়ি ঘটনাস্থলে রয়েছে। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, অগ্নিকাণ্ডের এই ঘটনায় কেউ হতাহত হননি।
কী কারণে তেল শোধনাগারে অগিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে সেই বিষয়ে ব্যাখ্যা দেননি তিনি। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসা একাধিক ভিডিওতে দেখা যায়, অগ্নিকাণ্ডের আগে ওই তেল শোধনাগারের আশপাশের আকাশে একটি সামরিক হেলিকপ্টার উড়ছে।
হেলিকপ্টারটি শোধনাগারের দিকে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে বিকট বিস্ফোরণ ঘটে এবং আগুনের লেলিহান শিখা দেখা যায়। ভিডিওতে দেখা যায়, ওই শোধনাগার থেকে ঘন কালো ধোঁয়া আকাশে উড়ছে।
ভূ-অবস্থান শনাক্তকারী অন্যান্য ভিডিওতে দেখা যায়, ওয়াগনার প্রাইভেট মিলিটারি কোম্পানির যোদ্ধারা ওই এলাকায় অবস্থান করছেন। শহরের উপকণ্ঠে অন্তত দুটি সামরিক হেলিকপ্টারও দেখা যায়।
রাশিয়ার সরকারি একাধিক গণমাধ্যম ভোরোনজ শহরের চারপাশে নিরাপত্তা বাহিনীর রাস্তা অবরোধের ভিডিও প্রকাশ করেছে। এই অবরোধ রোস্তভ-অন-দন থেকে উত্তর দিকে অগ্রসর হওয়া ওয়াগনারের সৈন্যদের বহরকে ঠেকানোর লক্ষ্যে বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে, ওয়াগনারের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিন মস্কোর সামরিক নেতৃত্বকে অপসারণে বিদ্রোহের ঘোষণা দেওয়ায় দেশজুড়ে সন্ত্রাসবিরোধী পদক্ষেপের অংশ হিসেবে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে রাশিয়া। ইতোমধ্যে মস্কো, ভোরোনেজ ও সেন্ট পিটার্সবার্গে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান শুরু করেছে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী।
দেশটির বিভিন্ন শহরের রাস্তায় চলাচলকারী লোকজনের নথিপত্র যাচাই-বাছাই, জনশৃঙ্খলা জোরদার, টেলিফোন কথোপকথনে নজরদারি এবং যোগাযোগ সীমিত করে ফেলা হয়েছে। এছাড়া রাস্তায় যানবাহন ও পথচারীদের চলাচলও সীমিত করেছে কর্তৃপক্ষ।