দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকার ভোটের মাঠ বিরোধীদল শূন্য করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এরই ধারাবাহিকতায় মামলা-গ্রেফতার করে দলটির নেতাকর্মীদের হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২২ জুন) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ভোটকে সামনে রেখে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। ১৮ সালের নির্বাচনের আগের মতো গোটা দেশে গায়েবি মামলা দিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা শুরু হয়েছে। বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের গোয়েন্দা বাহিনী তুলে নিয়ে যাচ্ছে। দল নির্বাচনে না এলেও তাদের নির্বাচনে অংশ নিতে জোর করা হচ্ছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ক্ষমতায় থাকতে এমন কোনো কাজ নেই যেটা সরকার করছে না। কেউ কেউ এমন মরিয়া হয়েছে যে দেশের ক্ষতি করতেও দ্বিধা করছে না।
তিনি বলেন, সরকার বুঝতে পেরেছে তাদের জনগণ গ্রহণ করবে না। নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় হাইব্রিড নেতাদের মাধ্যমে ক্ষমতায় যেতে চায়।
সরকারকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের আয়োজন করুন। নইলে জনগণ জানে কিভাবে তা আদায় করতে হয়।
বিএনপি সেন্ট মার্টিন দ্বীপ বা বাংলাদেশকে বিদেশিদের কাছে বন্ধক দিয়ে ক্ষমতায় আসতে চায় বলে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে মিথ্যা-বানোয়াট-ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘এটা (প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য) সম্পূর্ণভাবে বানোয়াট, ভিত্তিহীন, সর্ববৈ মিথ্যা কথা। এই কথাগুলো বলে উনি (শেখ হাসিনা) কিছু সুবিধা পেতে চান। সেই সুবিধা যদি উল্টো হয়…এটা উনি বুঝেন না।
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, ‘উনি (শেখ হাসিনা) কী এসব কথা বলেছেন উনার অফিশিয়াল পজিশন এজ প্রাইম মিনিস্টার অর এজ প্রেসিডেন্ট অব আওয়ামী লীগ। প্রাইম মিনিস্টার হয়ে এই বক্তব্য দিয়েছেন…তাই না। এখন আমি তাকেই (প্রধানমন্ত্রী) জিজ্ঞাসা করতে চাই, উনারা যে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট করেছেন সেই ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বা যেকেনো নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে যখন রং ইনফরমেশন দেওয়া যায়, মিথ্যা কথা বলা যায় তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট হয় না, মামলা আসে না। এখন কী এটা ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে মামলা করবে কি না যে, উনি বিএনপির বিরুদ্ধে এই অভিযোগটা এনেছেন… পড়ে কি না?’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখনো আজ পর্যন্ত কখনো কেউ বলে নাই যে, বিএনপি দেশবিক্রি করেছে বা দেশের কোনো জিনিস দিয়ে দিয়েছে’।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমার তার (শেখ হাসিনা) কাছে আহ্বান এখনো সময় আছে দয়া করে জনগণের যে ভাষা, জনগণের যে আশা-আকাঙক্ষা সেটা দেখুন এবং যে চাহিদা সেটা দেখুন। জনগণ চাচ্ছে এই মুহুর্তে আপনারা সরে যান। এটাই চাচ্ছে জনগণ।’
সংবাদ সম্মেলনে মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, যুগ্ম আহ্বায়ক মোশাররফ হোসেন খোকন, আবদুস সাত্তার, লিটন মাহমুদ, হাজী মো. মনির হোসেন, আ ন ম সাইফুল ইসলাম, মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সাঈদ হাসান মিন্টু, খন্দকার এনামুল হক এনাম, মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক দলের সাইদ মোরশেদ পাপ্পা, মহানগর দক্ষিণ কৃষকদলের হাজী মো. কামাল হোসেন, মোয়াজ্জেম হোসেন বাদশা ও পূর্ব ছাত্রদলের মোহাম্মদ আল আমিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।