সিরাজগঞ্জের তাড়াশে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া ওসি সেলিম রেজা চৌধুরীর বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অনশনরত সেই নারী উদ্যোক্তাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (২১ জুন) সন্ধ্যার দিকে ওসির পরিবারের লোকজন তাকে মারধর করেন বলে অভিযোগ ওই নারীর। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
এর আগে বুধবার (২১ জুন) সকাল থেকে ওই নারী বিয়ের দাবিতে ওসি সেলিম রেজা চৌধুরীর বাড়িতে অনশন শুরু করেন।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই নারী বলেন, ২০২০ সালে নাচোল থানার ওসি থাকার সময় সেলিম রেজার সঙ্গে আমার পরিচয়ের সূত্র ধরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেলিম রেজা নাচোল শহরের নাখেরাজপাড়ার একটি ভাড়া বাসায় নিয়ে বিয়ের আশ্বাসে আমার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। বিভিন্ন সময় আমাকে হোটেলে নিয়েও শারীরিক সম্পর্ক করেছেন। পরবর্তীতে সেলিম বদলি হয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে বিশেষ শাখা ও ভোলাহাট থানায় যান। ওই সময় পর্যন্ত আমাদের মধ্যে সম্পর্ক ছিল।
তিনি বলেন, সম্পর্কের শুরুতে সেলিম রেজা নিজের স্ত্রীকে ডিভোর্স দিয়েছেন জানিয়ে আমাকে বিয়ে করার আশ্বাস দেন। কিন্তু পরে জানতে পারি স্ত্রীকে ডিভোর্স দেননি তিনি। বিষয়টি স্ত্রী জানার পর ওসি সেলিম আমার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। চলতি বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি বিয়ের দাবিতে ভোলাহাট থানায় যাই। এ সময় আমাকে মারধর করে ও পুলিশ দিয়ে নির্যাতন করায় সেলিম। এরপর ২২ ফেব্রুয়ারি ভোলাহাট থানায় গেলে ওসি নিজে ও কনস্টেবল দিয়ে আমাকে বেধড়ক মারধর করেন। তারপরও বিয়ের দাবিতে অনশন করলে আমাকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠান। সাত দিন কারাভোগের পর মুক্ত হয়ে থানায় জব্দ করা আমার ফোন ফেরত নিয়ে দেখি আমাদের কথোপকথনের অডিও ও ভিডিও সব কিছু ডিলিট করা হয়েছে।
তাড়াশ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, বুধবার সন্ধ্যায় আমরা ওই নারীকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। তাকে মারধর করা হয়েছে বলে তিনি মৌখিকভাবে অভিযোগ করেছেন। এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত তিনি থানায় কোনো মামলা বা অভিযোগ দায়ের করেননি।
প্রসঙ্গত, গতকাল বুধবার (২১ জুন) সকালে বিয়ের দাবিতে সিরাজগঞ্জের তাড়াশের নওগাঁ ইউনিয়নের বানিয়াবহু গ্রামে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম রেজা চৌধুরীর (৪৯) বাড়িতে অনশন শুরু করেন ওই নারী (৩৩)। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল থানার খোলসী গ্রামের বাসিন্দা।